বাগদাদে অপহৃত জার্মান নারী মুক্তি পেয়েছেন: ইরাকি কর্মকর্তা

ইরাকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাগদাদে অপহরণের শিকার হওয়া এক জার্মান নারী মুক্তি পেয়েছেন। ইরাকের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ইয়াহিয়া রসুল শুক্রবার (২৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, হেলা ম্যুইস নামের ওই নারীকে নিরাপত্তা বাহিনী মুক্ত করেছে। তবে এর বেশি কিছু জানানো হয়নি ওই বিবৃতিতে। দেশটির সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মুখপাত্র আবদেল সাত্তার বায়রাকদার জানিয়েছেন, বাগদাদে রাতভর চালানো ওই অভিযানে সহায়তা দেয় একটি তদন্তকারী আদালত। তিনি জানান, এই বিষয়ে তদন্ত এখনও চলছে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।বাইসাইকেলে চড়ে যাওয়ার সময় অপহৃত হন হেলা ম্যুইস

জার্মান নাগরিক হেলা ম্যুইস বেশ কয়েক বছর ধরেই বাগদাদে বসবাস করেন। সেখানে তিনি বাইত তারকিব নামে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও) প্রতিষ্ঠার কাজ করছেন। এই এনজিও’র লক্ষ্য হলো স্থানীয় তরুণ শিল্পীদের কাজে সহায়তা করা। গত সোমবার নিজের শিল্প সংগ্রহের কার্যালয় থেকে বের হওয়ার কিছুক্ষণ পর তাকে অপহরণ করা হয়। তবে অপহরণকারীদের চিহ্নিত করা যায়নি।

একটি নিরাপত্তা সূত্রের বরাত দিয়ে অপহরণ ঘটনার বর্ণনায় ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, হেলা ম্যুইস নিজের বাইসাইকেলে করে যাওয়ার সময় দুটি গাড়ি আসে। এর একটি ছিল সাদা পিক-আপ ট্রাকে করে তাকে অপরহরণ করা হয়। এই ধরনের গাড়ি ইরাকের কয়েকটি নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করে থাকে।

ইরাকি কর্মকর্তারা হেলা ম্যুইসকে মুক্ত করার খবর দিলেও শুক্রবার পর্যন্ত তার ফোন খোলা পাওয়া যায়নি। বন্ধুরাও তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি। বাগদাদের জার্মান দূতাবাসও তাৎক্ষণিকভাবে কোনও মন্তব্য করেনি।

হেলা ম্যুইসের এক বন্ধু এএফপিকে জানান, ইরাকি স্কলার হিশাম আল-হাশেমি হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন ম্যুইস। গত বছর ইরাক জুড়ে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন আল-হাশেমি। ধিকরা সারসাম নামের ওই বন্ধু বলেন, ‘গত সপ্তাহে আমি তার (হেলা ম্যুইস) সঙ্গে কথা বলেছি আর সে নিজেও ওই বিক্ষোভে যুক্ত ছিল। সেকারণে (আল-হাশেমি) হত্যাকাণ্ডের পর সে নার্ভাস হয়ে পড়ে।’

গত মে মাসে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ মাস বিক্ষোভের মধ্যে ইরাকের বহু বিক্ষোভকারী গুম হয়ে গেছে। এই অপহরণের নেপথ্যে কাদের ভূমিকা থাকতে পারে সেবিষয়ে ওই প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি। তবে সশস্ত্র ব্যক্তি বা সংগঠনের ভূমিকা থাকতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়।

গত বছর ইরাকে বিদেশি নাগরিক অপহরণের ঘটনাও বেড়ে যায়। নববর্ষের আগের সন্ধ্যায় ফ্রান্সের দুই সাংবাদিককে ৩৬ ঘণ্টার জন্য জিম্মি করা হয়। এছাড়া ফরাসি তিন এনজিও কর্মীকে দুই মাসের বেশি সময় আটক রাখা হয়। এই দুটি ঘটনাতেই অপরহরণকারী কিংবা তাদের মুক্তির শর্ত সম্পর্কে কিছুই প্রকাশ করা হয়নি।