করোনায় ৩ দিনের ব্যবধানে যমজ দু্ই নার্স বোনের মৃত্যু

মাত্র তিনদিনের ব্যবধানে ব্রিটেনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন দুই যমজ বোন। পেশায় দুজনই ছিলেন নিবেদিতপ্রাণ নার্স। তারা মারাও গেছেন একই হাসপাতালে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও তাদের অপর এক বোনকে উদ্ধৃত করে এসব তথ্য জানিয়েছে।

noname

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কেটি-এমার আরেক বোন জো ডেভিস বিবিসিকে জানিয়েছেন, গত ২১ এপ্রিল (মঙ্গলবার) সাউদাম্পটন জেনারেল হাসপাতালে মারা যান ৩৭ বছর কেটি ডেভিস। তার যমজ বোন এমা ডেভিস মারা যান ২৪ এপ্রিল (শুক্রবার) সকালে।

কেটি কাজ করতেন সাউদাম্পটন শিশু হাসপাতালে। একই প্রতিষ্ঠানে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ৯ বছর কাজ করেছেন এমা। ওই হাসপাতালের প্রধান নার্সিং কর্মকর্তা গেইল বার্নি সহকর্মীদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় বলেছেন, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাদের দুজনেরই স্বাস্থ্যের অবনতি হতে শুরু করেছিল। যারা ওই দুই বোনকে চেনেন-জানেন কেবল তারাই বুঝবেন তাদের এই চলে যাওয়া পরিবার ও স্বজনদের জন্য কতোটা বেদনার।

এনএইচএস ফাউন্ডেশন ট্রাস্টের ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল সাউদাম্পটনের প্রধান নির্বাহী পলা হেড বলেন, ‌‌‘কেটির সহকর্মীরা সবসময় চাইত তার মতো একজন নার্স হতে। তিনি ছিলেন দৃষ্টান্ত। নার্সিং শুধু তার কাছে একটা চাকরি  না, তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু ছিল।’

এদিকে অবসরপ্রাপ্ত নার্স এমাকে নিয়ে সাউদাম্পটন শিশু হাসপাতালের প্রধান নার্সিং কর্মকর্তা গেইল বার্নি জানান, এমা ছিলেন একজন শান্ত-হাসিখুশি ও ভালো নেতা। কর্মরত অবস্থায় তিনি ছিলেন সবার প্রিয়। দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন এমা।

কেটি-এমার বোন জো বলেন, ‘তারা সবসময় বলতো, তারা একসঙ্গে পৃথিবীতে এসেছে আর একসঙ্গেই বিদায় নিতে চায়। তাদের সম্পর্ক ছিল অসাধারণ। তারা একসঙ্গেই থাকতো। কিন্তু কিছুদিন ধরে তাদের শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। অবশেষে সম্প্রতি তারা করোনায় পজিটিভ হওয়ার পর এই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।’

জো আরও বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে কতটা প্রিয় ছিল তা বর্ণনা করার কোনো ভাষা নেই। তারা সবসময় মানুষের সেবা করতে উদগ্রীব ছিল। ছোটবেলা থেকেই তারা এমনভাবে তাদের পুতুলের যত্ন করতো দেখে মনে হতো যেন তারা ডাক্তার কিংবা নার্স। তার জীবনের সবটা সময় রোগীদের সেবায় ছিল নিবেদিতপ্রাণ। কোথাও কোনও ঘাটতি ছিল না।’