শ্রীলঙ্কায় হামলা: খ্রিস্টানদের সংহতি জানাতে গির্জায় মালয়েশীয় মুসলিমরা

শ্রীলঙ্কায় ইস্টার সানডেতে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের প্রতি সংহতি জানাতে নিজেদের দেশের গির্জা পরিদর্শন করেছেন মালয়েশিয়ার একটি মুসলিম সংগঠনের সদস্যরা। গ্লোবাল ইউনিটি নেটওয়ার্ক (সংক্ষেপে ইউনিটি) নামের ওই সংগঠনের সদস্যরা সেন্টুলে সেন্ট জোসেফ’স চার্চে রবিবারের (২৮ এপ্রিল) প্রার্থনায় অংশ নেন। মালয়েশীয় সংবাদমাধ্যম দ্য সান-এর প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

ইউনিটির কয়েকজন সদস্য
রবিবার (২১ এপ্রিল) খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ইস্টার সানডে উদযাপনকালে শ্রীলঙ্কার রাজধানী কলম্বো ও তার আশপাশের তিনটি গির্জা এবং তিনটি হোটেলসহ আটটি স্থানে সিরিজ বোমা হামলা চালানো হয়। দেশটির সরকারের তথ্য অনুযায়ী, এ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ২৫৩ জন। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএস। সন্দেহভাজন মূল হোতা জাহরান হাশিম মোহাম্মদ। তাওহিদ জামাত বা এনটিজে নামে পরিচিত স্থানীয় উগ্রবাদী গোষ্ঠীর শীর্ষ নেতা সে। শ্রীলঙ্কা সরকারের সন্দেহ, তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এনটিজে’ই রবিবারের সিরিজ হামলা চালিয়েছে। আইএস’র পক্ষ থেকেও দাবি করা হয়েছে, বাগদাদির প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে হাশিমের পরিকল্পনা মাফিক ওই হামলা হয়েছে।

শ্রীলঙ্কায় ওই হামলার ঘটনায় রবিবার ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রতি সংহতি জানায় মালয়েশীয় সংগঠন ইউনিটি। রবিবার (২৮ এপ্রিল) সংগঠনের প্রেসিডেন্ট শাহ কিরিট কাকুলাল গোবিন্দজির নেতৃত্বে প্রায় ২৫ জন মুসলিম পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের একটি দল নিজ দেশ ও বিশ্বের ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রতি সমর্থন জানাতে গির্জা পরিদর্শন করেন। ধর্ম যাজক রেভেরেন্ড জর্জ পাকিয়াসামির সঙ্গে আলোচনায়ও অংশ নেন তারা। এদিন শহরের হিন্দু ও বৌদ্ধ মন্দিরও পরিদর্শন করেন তারা।

ইউনিটি সংগঠনটি দুই দশক ধরে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছে। একতা বাড়াতে মুসলিমদের অন্য ধর্ম সম্পর্কে শিক্ষা দিয়ে থাকে তারা।

এদিকে শ্রীলঙ্কায় সিরিজ বিস্ফোরণের ঘটনার এক সপ্তাহ পূর্ণ হলো রবিবার (২৮ এপ্রিল)। বিস্ফোরণের পর নতুন হামলার আশঙ্কায় বন্ধ রয়েছে গির্জাগুলো। এদিন তাই গির্জার বদলে টেলিভিশন সম্প্রচারে ধর্মোপদেশ দিয়েছেন কলম্বোর আর্চবিশপ কার্ডিনাল ম্যালকম রঞ্জিত। আর বাড়িতে টিভির সামনে বসেই প্রার্থনায় যোগ দেন দেশটির ক্যাথলিক খ্রিস্টানরা। ম্যালকম রঞ্জিত বলেন, “গত রবিবার যে মহা ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে তার মধ্য দিয়ে আমাদের হৃদয়কে পরীক্ষা করার সময় এসেছে। ‘ঈশ্বর কি সত্যিই আমাদের ভালোবাসেন’,‘তার কি আমাদের প্রতি কৃপা আছে’- এ প্রশ্নগুলো মানুষের মনে জেগে ওঠার সময় এসেছে।”