‘এই গল্পটা আটকে থাকলে তাদের কী উপকার হবে’

সালমান-সামিরার প্রেম ও সংসারের গল্প কম-বেশি সবাই জানেন। তবে কেমন করে তারা একে অপরের প্রেমে পড়েছেন, সেটি জানেন না তেমন কেউ। এমন ভাবনা থেকেই সামিরার সঙ্গে আলাপ করে একটি প্রেমের সিনেমা বানাতে চেয়েছেন জ্যেষ্ঠ নির্মাতা ছটকু আহমেদ। যেখানে তিনি তুলে ধরতে চেয়েছেন অমর নায়ক সালমান শাহ এবং তার স্ত্রী সামিরার প্রেমের গল্পটি।

সম্প্রতি এমন ঘোষণার পরই বাধ সাধেন সালমান শাহের মা লন্ডন প্রবাসী নীলা চৌধুরী। তার আপত্তিতে সিনেমাটির নির্মাণ প্রক্রিয়া বন্ধ করতে হয়েছে বলে জানালেন নির্মাতা। 

সালমানের মা লন্ডন থেকে টেলিফোন করে সিনেমাটি বানাতে নিষেধ করেছেন বলে জানান ছটকু আহমেদ। তার ভাষায়, ‘২০২০ সালে সোহান (নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান) এই সিনেমাটির উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই সময় আমি আর সোহান সামিরার সঙ্গে কথা বলে সিনেমার গল্প সাজিয়েছিলাম। তাদের প্রেম কাহিনি অনেক সিনেম্যাটিক। সামিরার মুখে সেই গল্প শুনে আমাদের ভালো লেগেছিল। তখন সেটি আর হয়নি। এর মধ্যে সোহানও মারা গেলো। সম্প্রতি গল্পটির কথা মনে পড়ে। সালমান ও সোহানের স্মরণে সিনেমাটি তৈরির উদ্যোগ নিই। সামিরার সঙ্গে যোগাযোগ করলে সে আবারও সম্মতি দেয়। এই খবর পেয়ে কয়েক দিন আগে নীলা চৌধুরী লন্ডন থেকে ফোন করে আমাকে জানান, সালমানকে নিয়ে কোনও সিনেমা বানানো যাবে না। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া আছে তাদের। নীলা চৌধুরীর এ সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সিনেমাটির কাজ স্থগিত করেছি।’

আক্ষেপ করে ছটকু আহমেদ বলেন, ‘এটি সালমানের বায়োপিক নয়; দুই তরুণ-তরুণীর প্রেম কাহিনি। এই গল্পে নীলা চৌধুরীর তেমন ভূমিকা নেই। এরপরও কেন তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়। গল্পটি সামিরার। তাই সামিরার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। সামিরার সঙ্গে আমার ছবি দেখার পর সালমানের বেশ কয়েকজন ভক্ত গালাগাল করেছে। সব মিলিয়ে এখন আর সিনেমাটি নিয়ে ভাবতে চাইছি না।’ 

নির্মাতার প্রশ্ন, ‘এই গল্পটা আটকে থাকলে তাদের (সালমানের মা ও ভক্ত) কী উপকার হবে, সেটা বুঝতে পারছি না। ২৮ বছর ধরে হত্যা-আত্মহত্যা নিয়ে যে চিৎকার করা হচ্ছে, তাতেই বা সালমানের কী লাভ হলো? এই সময়ের মধ্যে তো সালমানের নামে কোনও একটা ইনস্টিটিউট হয়নি, তাকে নিয়ে কোনও বই (সিনেমা) বের হয়নি। তাদের মুখে একটাই গল্প—হত্যা, নাকি আত্মহত্যা?’

ছটকু আহমেদ ও সামিরাবলা দরকার, নায়ক হওয়ার আগেই ভালোবেসে সামিরাকে বিয়ে করেছিলেন সালমান শাহ। চট্টগ্রামের একটি ফ্যাশন শোতে ১৯৯০ সালের ১২ জুলাই তাদের পরিচয়। ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা, প্রেম; এরপর বিয়ের সিদ্ধান্ত। সামিরাকে বিয়ে করার জন্য আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলেন সালমান! ১৯৯২ সালের ২০ ডিসেম্বর গোপনে বিয়ে করেন সালমান-সামিরা। তাদের এই প্রেম কাহিনি নিয়েই ‘স্বপ্নের রাজকুমার’ বানাতে চেয়েছিলেন ছটকু আহমেদ।

ঢাকাই সিনেমার অমর নায়ক সালমান শাহ। মাত্র ৪ বছরের অভিনয় ক্যারিয়ারে তিনি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন ২৭টি সিনেমা। যার সব ছিল সুপারহিট। সিনেমার সেই ধূমকেতুর আলো নিভে যায় ১৯৯৬ সালে। ওই বছর ৬ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান তিনি। তবে সেটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা- এ বিষয়ে প্রশ্ন জারি রয়েছে সালমান ভক্ত ও পরিবারের।