টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ৪৯তম আসরে পিপল’স চয়েস অ্যাওয়ার্ড জিতে চমকে দিলো ‘দ্য লাইফ অব চাক’। যুক্তরাষ্ট্রের মাইক ফ্লানাগ্যানের পরিচালনায় এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ব্রিটিশ তারকা টম হিডলস্টন। ২০২০ সালে প্রকাশিত স্টিফেন কিংয়ের উপন্যাস অবলম্বনে তৈরি হয়েছে এটি। একজন সাধারণ হিসাবরক্ষকের জীবনের তিন অধ্যায়ের গল্প বলা হয়েছে এতে।
হেভিওয়েট তারকা ও নির্মাতাদের চলচ্চিত্রগুলোকে হটিয়ে দর্শকভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছে এবারের আসরের ডার্ক হর্স ‘দ্য লাইফ অব চাক’। কোনও পরিবেশনা স্বত্ব ছাড়াই গত ৬ সেপ্টেম্বর উৎসবে এর বিশ্ব প্রিমিয়ার হয়। ছবিটির মুক্তির তারিখ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এতে আরও অভিনয় করেছেন শিওয়েটেল এজিয়োফর, কারেন গিলান, মার্ক হ্যামিল, জ্যাকব ট্রেম্বলি ও কোডি ফ্লানাগ্যান।
২০১২ সাল থেকে টরন্টো উৎসবে পিপল’স চয়েস অ্যাওয়ার্ড জয়ী ছবি পরবর্তী অস্কারে সেরা চলচ্চিত্র বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে। কোনও কোনও ছবি অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডসের বিভিন্ন বিভাগে পুরস্কার জিতেছে। এ তালিকায় আছে ‘গ্রিন বুক’, ‘লা লা ল্যান্ড’, ‘জোজো র্যাবিট’, ‘নোম্যাডল্যান্ড’, ‘দ্য ফ্যাবলম্যানস’, ‘আমেরিকান ফিকশন’। টরন্টোতে দর্শকভোটে জেতায় ‘দ্য লাইফ অব চাক’-এর অস্কার সম্ভাবনা জোরালো হয়েছে বলে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন বোদ্ধারা।
৪৯তম টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের পর্দা নেমেছে রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর)। দর্শকভোটে প্রথম রানার-আপ হয়েছে ফরাসি পরিচালক জ্যাক অদিয়ারের ‘এমিলিয়া পেরেস’। এর আগে ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রী পুরস্কার জিতেছে এর তিন তারকা জোয়ি স্যালডানা, সেলেনা গোমেজ ও কার্লা সোফিয়া গ্যাসকন।
দ্বিতীয় রানার-আপ হয়েছে ৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসবে স্বর্ণপাম জয়ী শন বেকারের ‘আনোরা’। একজন যৌনকর্মীকে কেন্দ্র করে এর গল্প।
প্রামাণ্যচিত্র বিভাগ থেকে পিপল’স চয়েস অ্যাওয়ার্ড জিতেছে ‘দ্য ট্র্যাজিক্যালি হিপ: নো ড্রেস রিহার্সেল’। এর বিষয়বস্তু কানাডিয়ান ব্যান্ড দ্য ট্র্যাজিক্যালি হিপের শেষ কনসার্ট। ব্যান্ডের মূল গায়ক গর্ড ডাউনির ভাই মাইক ডাউনি প্রামাণ্যচিত্রটি নির্মাণ করেছেন। অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওতে আসবে এটি।
গত ৫ সেপ্টেম্বর এবারের টরন্টো উৎসবের পর্দা ওঠে।
উৎসবের ডিসকভারি প্রোগ্রামে বিভিন্ন দেশের নবাগত ও উদীয়মান পরিচালকদের প্রথম ও দ্বিতীয় পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র জায়গা পেয়ে থাকে। এবারের আসরে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশের একমাত্র সিনেমা ‘সাবা’সহ ২৪টি চলচ্চিত্র। এরমধ্যে ২০টির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে মেহজাবীন চৌধুরী অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘সাবা’-ও। মাকসুদ হোসেন পরিচালিত এই সিনেমার তিনটি শো হয় উৎসবে। এরমধ্যে দু’টিতে সরাসরি অংশ নিয়েছেন মেহজাবীন, নির্মাতা ও সহশিল্পী মোস্তফা মনওয়ার।
প্রথম কোনও বৈশ্বিক চলচ্চিত্র উৎসবে অভিনেত্রীর ব্যাজ গলায় ঝুলিয়ে অংশ নেন মেহজাবীন চৌধুরী। পুরো উৎসবজুড়েই তিনি ছিলেন দারুণ ছন্দে। কথা বলেছেন সিনেমা নিয়ে, বৈঠক করেছেন সিনেমা প্রফেশনালদের সঙ্গে, ক্যামেরাবন্দী হয়েছেন অদ্ভুত মুগ্ধতা নিয়ে।
তার মতে, ১৪ বছরের অভিনয় জীবনে এটি সেরা যাত্রা। যে যাত্রায় মুগ্ধতা ছাড়া আর কোনও চাওয়া-পাওয়ার হিসাব নেই।