টিভি, ওটিটি ও ইউটিউব কেন্দ্রিক অভিনয়শিল্পীদের মধ্যে ক্ষোভের দানা ক্রমশ বাড়ছে। তাদের সংগঠন অভিনয়শিল্পী সংঘ’র সংস্কার তথা বর্তমান কমিটির সদস্যদের পদত্যাগের দাবিতে গত ক’দিন ধরে সংঘবদ্ধ হচ্ছেন অর্ধশতাধিক শিল্পী। তারই আনুষ্ঠানিক বহিঃপ্রকাশ ঘটলো মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রবীন্দ্র সরোবরে।
এই আন্দোলনের অন্যতম কণ্ঠ আজমেরী হক বাঁধন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, ‘৫ আগস্ট একটা স্বৈরাচারী সরকার পতন হয়েছে বটে, কিন্তু তাদের দোসররা রয়ে গেছেন বিভিন্ন জায়গায়। যাদেরকে আমরা আসলে অনুসরণ করতে পারি না। আমরা এই মিডিয়াটাকে যেভাবে দেখতে চাই, সেটা দেখাতে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। খুবই সম্মানের সঙ্গে বলছি, আপনারা (কমিটির বর্তমান সদস্য) জায়গাটা (পদ) ছেড়ে দেখেন। আপনারা খুব একটা দুঃখ পাবেন না, মন খারাপ করার মতো কিছু ঘটবে না। বিশ্বাস করেন।’
‘দৃশ্যমাধ্যমের শিল্পী সমাজ’-এর ব্যানারে এদিন বিকাল তিনটায় অনুষ্ঠিত এই আয়োজনের স্লোগান ‘কথা বলতে চাই, কথা শুনতে চাই’। এতে অভিনয়শিল্পীরা সংগঠন সংস্কার নিয়ে নানা মতামত তুলে ধরেন।
আজমেরী হক বাঁধন ছাড়াও এসময় উপস্থিত ছিলেন শ্যামল মাওলা, খায়রুল বাসার, মনোজ প্রামাণিক, সাবেরী আলম, সোহেল মণ্ডল, নাজিয়া হক অর্ষা, মোস্তাাফিজুর নূর ইমরান, ইমতিয়াজ বর্ষণ, সমাপ্তি মাসুক, এলিনা শাম্মি প্রমুখ।
শ্যামল মাওলা বলেন, ‘কয়েকদিন হলো শিল্পীদের একটি রাজনীতি পক্ষ প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এটা তো আমরা চাই না। আমরা একই পরিবার এক ছাতার নিচে সবাই থাকতে চাই। আমাদের কোনও পক্ষ থাকতে পারে না। কারণ শিল্পীদের কোনও পক্ষ নেই। শিল্পীদের সব বিষয় নিয়ে আমরা শিল্পী সংঘের নেতাদের সঙ্গে আলাপে বসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বসছেন না। আমরা কি তাহলে শিল্পী না?’
নাজিয়া হক অর্ষা বলেন, ‘৫ আগস্টের পর নতুনভাবে আমাদের দেশের পথচলা শুরু হয়েছে। আমাদের সিনিয়র শিল্পীরা গত দুই মাসে যে সমস্ত কুকর্ম করেছেন, তার কটুকথা আমাদেরও হজম করতে হয়েছে। এখন দেশের সবখানে সংস্কার চলছে। আমরা মনে করি, আমাদের শিল্পীদের জন্য সেটা আগে জরুরী। শিল্পী হিসেবে আমি তো কোনও দলভিত্তিক কাজে ছিলাম না। আমি তো ন্যায়কে ন্যায় বলবো অন্যায়কে অন্যায়। যদি সেটা না করতে পারি তাহলে আমি কিসের শিল্পী। কিন্তু আমাদের সংগঠনের কিছু শিল্পী-নেতাদের কারণে আজ আমরা জনগণের প্রশ্নের মুখে পড়েছি। সেজন্য আমরা শিল্পী সংঘের কিছু বিষয় নিয়ে নেতাদের সঙ্গে বসতে চেয়েছি। কিন্তু তারা আমাদের সঙ্গে বসতে নারাজ। শেষে আমি বলতে চাই, আপনারা যদি আমাদের সঙ্গে না বসেন, তবে এতোদিন আপনারা যা করেছেন সেগুলোর উত্তর আপনাদের দিতেই হবে।’
এর আগে এই ব্যানারে ৭ সেপ্টেম্বর ৪৬ জন শিল্পী একটি জরুরি বৈঠকে বসেন অভিনয়শিল্পী সংঘ সংস্কার করার লক্ষ্যে। তাতে সাড়া দেয়নি সংঘের কর্তারা। ফলে সেই বৈঠক থেকে, ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কমিটির সদস্যদের পদত্যাগের আলটিমেটাম দেওয়া হয়।
যদিও এ বিষয়ে সংঘের কর্তাদের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি এদিন (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টা পর্যন্ত।