কোকা-কোলা বিতর্ক: আত্মপক্ষ সমর্থনে নির্মাতা-অভিনেতা

বিষয়টি এমন পর্যায়ে গেছে, নরেন্দ্র মোদির শপথ অনুষ্ঠান, কোরবানির গরুর হাট কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে চলা বিশ্বকাপ; সবই যেন থমকে গেছে। চলছে শুধু কোকা-কোলা বাংলাদেশ নাকি কোকা-কোলা ইসরায়েল বিতর্ক। এই বিতর্ক অবশ্য ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের শুরু থেকেই চলছে। দেশে জোয়ার উঠেছে বয়কট কোকা-কোলা রব। অভিযোগ, এই পানীয় নাকি ইসরায়েলিদের!

মূলত এই বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলে দিলো কোকা-কোলা বাংলাদেশ-এর একটি নতুন বিজ্ঞাপনচিত্র। যেটিতে মডেল হিসেবে দেখা যাচ্ছে ব্লকবাস্টার ‌‌‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ সিরিজের দু’জন অন্যতম সদস্য শরাফ আহমেদ জীবন ও শিমুল শর্মাকে। তবে বিজ্ঞাপনচিত্রটি ‘ব্যাচেলর’কর্তা কাজল আরেফিন অমির নির্মাণে নয়। যেটি তিনি ১০ জুন দুপুরেই সাফ সাফ জানিয়ে নিজের দায় এড়িয়েছেন। 

পরে জানা গেছে, অভিনয়ের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনচিত্রটি অভিনেতা জীবন নিজেই বানিয়েছেন। ফলে বেলাশেষে বিতর্ক বা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন ‘লাবু কমিশনার’-খ্যাত জীবন।   

না। তিনি চুপসে যাননি। বরং আত্মপক্ষ সমর্থনে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস ও বিজ্ঞাপনচিত্র নির্মাণের প্রেক্ষাপটের কথা। জীবন বলেন, ‘আমি একজন নির্মাতা এবং অভিনেতা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। বিগত দুই দশক ধরে নির্মাণ ও অভিনয়ের সাথে জড়িত। সম্প্রতি কোকা-কোলা বাংলাদেশ তাদের একটি বিজ্ঞাপন নির্মাণ এবং অভিনয় করার জন্য আমাকে নিয়োগ করেছিলো। আমি শুধুমাত্র তাদের দেয়া তথ্য ও উপাত্তই কাজটিতে তুলে ধরেছি।’

এরপর কথা বললেন বিজ্ঞাপনটি প্রচারের পর নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া নিয়েও। জীবনের ভাষায়, ‘বিজ্ঞাপনটি প্রচার হবার পর থেকে আমি আপনাদের অনেক মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করছি এবং আপনাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে আমি বলতে চাই, কাজটি শুধুই আমার পেশাগত জীবনের একটি অংশ মাত্র।’

বিজ্ঞাপনটি দেখা যাবে এখানে ক্লিক করে

জীবন জানালেন নিজের ব্যক্তিগত অভিমতও। বললেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে আমি সবসময় মানবাধিকার বিরোধী যে কোনও আগ্রাসনের বিপক্ষে দাঁড়িয়েছি এবং আপনাদের অনুভূতি ও মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেছি। এই বিজ্ঞাপনে আমি কোথাও ইসরায়েলের পক্ষ নিইনি এবং কখনোই আমি ইসরায়েলের পক্ষে নই। আমার হৃদয় সবসময় ন্যায়ের পক্ষে এবং মানবতার পাশে আছে, থাকবে।’

বিজ্ঞাপনচিত্রটি কোকা-কোলা বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ তথা নির্মাতা-অভিনেতা জীবন দেখাতে চেয়েছেন, এই পানীয় ইসরায়েলের নয়, তথ্যটি ভুল। ১৩৮ বছর ধরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৯০টি দেশের মানুষ কোক পান করে আসছে। এটাও বলা হয়, খোদ ফিলিস্তিনেও কোকা-কোলার ফ্যাক্টরি রয়েছে। 

মূলত এসব তথ্য প্রকাশ কিংবা কোকা-কোলা’র পক্ষে কাজ করার দায় হিসেবেই বিজ্ঞাপন সংশ্লিষ্টদের তুলোধুনো করছে আমজনতা থেকে সুশীল-বিশেষজ্ঞ অনেকেই।