অহং কিংবা ঈর্ষায় ডুবে এমন করে তেমন আর কেউ সহশিল্পীকে নিয়ে লেখেন না। অথবা লিখতেও পারেন না। যেটা পারেন অভিনেতা সজল নূর। বরাবরই তিনি সহশিল্পীদের নিয়ে মন খুলে বলেন সোশ্যাল হ্যান্ডেলে।
তেমনই লিখলেন অপি করিমের জন্মসন্ধ্যায়, ১ মে। ভাসালেন মুগ্ধতায়। জানালেন অভিনেত্রী অপি করিম সম্পর্কে, অল্প কথায় বিশদ। বললেন, ‘অপি করিম, জাদুকরী একজন অভিনেত্রী। অভিনয়ের জাদু জানেন যিনি। অভিনয় করে দর্শক সম্মোহন করার এক অদ্ভুত ক্ষমতা আছে এই মানুষটির।’
অপি করিমএরপর অভিনেত্রীর সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতায় নেমে পড়লেন সজল। বললেন, ‘‘তার সাথে প্রথম কাজ করার সুযোগ হয়েছিল মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের ‘ছায়াফেরী’ নাটকে। আফজাল হোসেন, অপি করিম আর আমি- তিন জন একত্রে কাজ করছিলাম। আমার শুরুর দিকের কাজ, অনেক খুঁটিনাটি বিষয় জানি না, বুঝি না, তখনকার কাজ এটি। এরপরেও করে যাচ্ছিলাম ডিরেক্টর আর কো-আর্টিস্টদের সহযোগিতায়। আমি বরাবরই ব্লেসড আর্টিস্ট, কারণ আমার কো-আর্টিস্টদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাই শুরু থেকে এখনও। অপিও সেক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়। যতবার কাজ করেছি তার সঙ্গে, ততবারই কিছু না কিছু শেখা হয়েছেই।’’
সজল নূরএবার উদাহরণ টেনে সরাসরি অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন অভিনেতা। বললেন, ‘‘একটি নাটকের কথা না বললেই নয়, নুজহাত আলভি আহমেদ পরিচালিত ‘নৈবেদ্য’। মাস্টার শট হয়ে যাওয়ার পর ক্লোজআপ নেওয়া হবে। আমি তখন ক্লোজআপ দেখার জন্য মনিটরের পাশে গিয়ে বসি। একজন মানুষের চোখ কতো কথা যে বলতে পারে, সেটা অপিকে না দেখলে বোঝা যায় না। ক্লোজশটে অপি যখন ফ্রেম ইন করলেন, তার মুখ দিয়ে কিছু বলবার প্রয়োজন ছিল না। তার চোখ যেন প্রতিটি শব্দ বলে যাচ্ছিল। সেটের সবাই ভীষণ মুগ্ধ হয়ে তালি দেওয়া শুরু করলো, আমিও তা-ই করলাম। সেদিন বুঝলাম, ভালো অভিনয় কাকে বলে!’’
অপি করিমএরপর একে একে অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন সজল-অপি। আরেক দিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে সজল বলেন, ‘আরেকটি নাটকের শুটিংয়ে ক্লোজআপ শট চলার সময় অপি আমাকে বললেন, ফ্রেম বুঝে অভিনয় করলে ভালো। মানে যখন যেমন ফ্রেম তখন তেমন ডেলিভারি। এটাও আমার নতুন করে কিছু শেখা। কতো স্বতঃস্ফূর্তভাবে বা কতটা স্বাভাবিক থেকে অভিনয় করা যায়, সেটা অপির কাছ থেকে প্রতি মুহূর্তেই বোঝা যায়। শুভ জন্মদিন, অপি করিম।’
সজল নূরবলা ভালো, অপি করিমের পুরো নাম সৈয়দা তুহিন আরা করিম অপি। জন্ম ১ মে ১৯৭৯ সাল। তিনি একাধারে অভিনেত্রী, মডেল, স্থপতি ও নৃত্যশিল্পী । তিনি প্রধানত টিভি নাটকের অভিনয়শিল্পী। ১৯৯৯ সালে লাক্স ফটোজেনিক প্রতিযোগিতায় ‘মিস ফটোজেনিক’ খেতাব অর্জন করেন। ২০০৪ সালে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘ব্যাচেলর’ চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এখন সংসার ও স্থপতি হিসেবে নিজেকে গুছিয়ে নিলেও বছরে এক দুটি অসাধারণ কাজে পাওয়া যায় অপিকে।
অপি করিম