বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, সমাধান না হলে ‘ঢাকা ব্লকেড’

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর বাংলামোটরে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১০টার দিকে বাংলামোটর রূপায়ণ টাওয়ারের সামনের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা। পরে রাত সাড়ে ১১টার পর সড়ক ছেড়ে চলে যান শিক্ষার্থীরা। এতে ফার্মগেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত যান চলাচল ব্যাহত হয়। 

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলেও নতুন ছাত্রসংগঠনে তাদের উপেক্ষা করা হয়েছে। বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ কমিটি ঘোষণার সময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা ও সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত আট শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। 

এই ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা রাত ৮টার দিকে বাংলামোটরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাত সাড়ে ৮টায় শাহবাগে সংবাদ সম্মেলনে তারা ‘গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ’ কমিটিকে অযোগ্য ঘোষণা করেন এবং নতুন কমিটি পুনর্গঠনের দাবি জানান।

বৈষম্যের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সমাধান না হলে ২৮ ফেব্রুয়ারি ‘ঢাকা ব্লকেড’ কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, গণঅভ্যুত্থানের পর নতুন বাংলাদেশ গঠনে তারা ভূমিকা রাখলেও এখন তাদের বাইরে রাখা হচ্ছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যাবে না।

এদিকে রাত ১টার দিকে মোবাইল ফোনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য (সমন্বয়ক) ও ইস্টওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থী নাঈম আবেদিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ঢাবিতে 'বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের' দুপক্ষের সংঘর্ষ ঘটনায় সমাধান করতে ঢাবি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী (সব সমন্বয়ক) একসঙ্গে এখনও বৈঠক করা হচ্ছে। এই বৈঠক শেষ হতে রাত তিনটা বাজতে পারে। এরপর বৈঠকের বিষয়ে জানানো হবে। তবে বিষয়টি সমাধানের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হচ্ছে। যাতে করে কোনোভাবে নিজেদের মধ্যে কোনও বিভেদ না থাকে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্য সচিব আতিক শাহরিয়া জানান, আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন এলাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর নৃশংস অতর্কিত হামলায় যারা মদদ দিয়েছে তাদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটি গঠনসহ দোষীদেরকে সকল সাংগঠনিক পদ পদবি থেকে অব্যাহতি পূর্বক বহিষ্কার করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, ঢাবি সিন্ডিকেট মেইনটেইন করে যে অগণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ কমিটি প্রকাশিত হয়েছে আমরা সেটা ঘৃণা ভরে প্রত্যাখান করছি এবং এই লেজুড় ভিত্তিক সিন্ডিকেট কমিটি বয়কট ঘোষণা করছি। অতি দ্রুত আলোচনা সাপেক্ষে এ কমিটি বাতিল ঘোষণা পূর্বক সকল স্টেক হোল্ডারদের অংশীদারত্ব নিশ্চিত করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে হবে।

এসময় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল দেশের সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি এবং মানববন্ধন পালন করার আহ্বান জানানো হয়। সেই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে দাবি মেনে নেওয়া না হলে পরবর্তীতে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেন আতিক।