এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। এসময় জাতীয়করণসহ তারা ১০ দফা দাবি জানান।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের ব্যানারে তারা এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতারা বলেন, গত ২ সেপ্টেম্বর শিক্ষক নেতাদের ১০ জনের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষ উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তারা এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণসহ শিক্ষা সংস্কারের একটি লিখিত প্রস্তাব উপদেষ্টার হাতে তুলে দেন। উপদেষ্টা আন্তরিকতার সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ব্যবস্থা নেবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে সন্তোষজনক সাড়া পাওয়া যায়নি। বৈষম্যহীন শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিতে এপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ এখন সময়ের দাবি বলে জানান তারা।
শিক্ষকদের ৯ দফা দাবি
১। শতভাগ উৎসব ভাতা, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর আওতায় বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা প্রদান এবং গ্রেড বৈষম্য নিরসন।
২। জোর পূর্বক পদত্যাগ করানো প্রতিষ্ঠান প্রধান, সহ-প্রধান, সহকারী শিক্ষক এবং প্রভাষকদের পদত্যাগ পত্র অবৈধ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারিসহ যোগদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩। সহকারী শিক্ষকদের প্রারম্ভিক বেতন গ্রেড সরকারি স্কুলের ন্যায় দশম গ্রেডে উন্নীতকরণ, সহকারী প্রধান শিক্ষকদের বেতন সপ্তম গ্রেডে ও প্রধান শিক্ষকদের বেতন ষষ্ঠ গ্রেডে উন্নীতকরণ এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক, উপাধ্যক্ষ, অধ্যক্ষদের চাকরি জীবনে দুটি উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
৪। সর্বজনীন বদলির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
৫। মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষকদের যুগোপযোগী সংস্কারসহ কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষদের বেতন তৃতীয় গ্রেডে এবং উপাধ্যক্ষদের বেতন চতুর্থ গ্রেডে উন্নীতকরণ এবং স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষকদের এমপিওভূক্তিসহ জাতীয়করণ ও শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির আওতায় আনতে হবে।
৬। কলেজ শিক্ষকদের অনুপাত প্রথা বাতিলসহ জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের স্থলে সহকারী অধ্যাপক পদটি পুনঃপ্রতিস্থাপন, ডিগ্রি ও অনার্স কলেজের তৃতীয় শিক্ষকের এমপিওভুক্তিকরণ, ডিগ্রি ও মাস্টার্স কলেজের অধ্যক্ষদের তৃতীয় গ্রেডে এবং উপাধ্যক্ষদেরকে চতুর্থ গ্রেডে বেতনের ব্যবস্থাকরণ, কলেজের প্রদর্শকরা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করলে তাদেরকে প্রভাষক পদে পদায়ন এবং স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষদেরকে চতুর্থ গ্রেডে বেতনের ব্যবস্থা করতে হবে।
৭। স্বীকৃতিপ্রাপ্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করতে হবে।
৮। কর্মচারীরা উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করলে তাদেরকে পরবর্তী পদে পদায়নের ব্যবস্থা করতে হবে।
৯। মাধ্যমিক ডিজি আলাদাকরণ পূর্বক এমপিওভুক্ত শিক্ষকদেরকে শিক্ষা প্রশাসনে আনুপাতিক হারে পদায়নের ব্যবস্থা করতেহবে।
আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সরকার এসব দাবি পূরণ না করলে জোটের পরবর্তী সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণপূর্বক ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি পালনসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান ও অনশন কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারিও দেন তারা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোটের সমন্বয়ক অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দীনের সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন মো. জহিরুল ইসলাম, মো. আবুল বাশার, মো. নূরুল আলম খান, অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী, মো. মুজিবুর রহমান বাবুল, জসিম উদ্দিন আহম্মেদ, দুলাল চন্দ্র চৌধুরী প্রমুখ।