সরকারি মাধ্যমিকে শিক্ষক বদলির নীতিমালায় কী আছে

য়শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ‘সরকারি মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষক-কর্মকর্তা বদলি নীতিমালা-২০২৪’ করেছে সরকার। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করে।

নীতিমালার শিরোনামে বলা হয়, শিক্ষার মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকরণ ও প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে সরকারি শিক্ষক-কর্মকর্তাদের বদলি নীতিমালা না থাকায় এবং বদলি ও পদায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পরিপত্র বা অফিস আদেশ যুগোপযোগী করার উদ্দেশ্যে এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হলো।

নীতিমালার আওতা

এই নীতিমালায় শিক্ষক বলতে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত সহকারী শিক্ষক, সহকারী শিক্ষিকা, সিনিয়র শিক্ষক, সিনিয়র শিক্ষিকা, সহকারী প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষিকা, প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষিকা বোঝাবে। আর কর্মকর্তা বলতে শিক্ষার সরকারি মাধ্যমিক স্তরে কর্মরত উপপরিচালক, সহকারী পরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, বিদ্যালয় পরিদর্শক, বিদ্যালয় পরিদর্শিকা, সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক, সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শিকা বোঝাবে।

বদলির সময়কাল

১) প্রতি শিক্ষাবর্ষে শুধুমাত্র এপ্রিল ও অক্টোবর মাসে আগ্রহী শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বদলির আবেদন করতে পারবেন। এই সময়-সীমা ছাড়া অন্য কোনও সময় বদলির জন্য আবেদন করা যাবে না। তবে অনিবার্য বা বিশেষ পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক বিশেষ ও অনিবার্য পরিস্থিতিতে বদলির আবেদন নিষ্পত্তি করবেন।

২) প্রতি এপ্রিল ও অক্টোবর মাসে শিক্ষক ও কর্মকর্তারা যুক্তিযুক্ত কারণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে  শর্ত সাপেক্ষে সরাসরি (অনলাইনে) আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদনের আবশ্যকতা নেই।

আবেদনের শর্ত

১) বর্তমান কর্মস্থলে চাকরিকাল তিন বছর পূর্ণ হতে হবে।  বদলির জন্য উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে।

আবেদন বিবেচনায় অনুসরণীয় বিষয়

অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদের বিপরীতে অন্য বিষয়ের শিক্ষক বদলি বা পদায়ন করা যাবে না। অনুচ্ছেদ ৪ এ উল্লিখিত সময় এবং শর্তের বাইরে কাউকে বদলি করা যাবে না। (অনুচ্ছেদ ৪ এ বলা আছে, বর্তমান কর্মস্থলে চাকরিকাল তিন বছর পূর্ণ হতে হবে, বদলির জন্য উপযুক্ত কারণ থাকতে হবে।)

তবে সরকার উপযুক্ত মনে করলে যেকোনও শিক্ষক ও কর্মকর্তাকে যেকোনও সময় কোনও ধরনের শর্ত ছাড়াই বদলি বা পদায়ন করতে পারবে।

বদলির ক্ষেত্রে আবেদনকারীর নিজ জেলা বা পার্শ্ববর্তী জেলায় পদায়নের বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বামী বা স্ত্রী উভয়ই সরকারি কর্মচারী হলে স্বামী বা স্ত্রীর কর্মস্থলে অথবা নিকটবর্তী কর্মস্থলে বদলি বা পদায়ন অগ্রাধিকার পাবে।

অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটিতে যাওয়ার এক বছর আগে কোনও শিক্ষক বা কর্মচারী অবসরভাতা গ্রহণের সুবিধার্থে কোনও সুবিধাজনক কর্মস্থলে বদলির আবেদন করলে তার আবেদন সবোর্চ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। এ ধরনের বদলির ক্ষেত্রে শর্ত অনুযায়ী, সময়সীমা প্রযোজ্য হবে না। মহানগরী ও জেলা সদরে অবস্থিত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা স্কুল অ্যান্ড কলেজে কর্মরত কোনও শিক্ষকের কর্মকাল একই প্রতিষ্ঠানে একাধারে চার বছরের বেশি হলে, তাকে তার নিজ জেলায় অথবা কর্মস্থলের পার্শ্ববর্তী জেলায় বদলি করা যাবে। তবে তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি, অথবা অন্য কোনও অভিযোগ উত্থাপিত হলে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া সাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা (প্রয়োজনে ফৌজদারি ব্যবস্থা গ্রহণ) গ্রহণসহ তাকে অন্যত্র বদলি বা পদায়ন করতে পারবে।

সমতলের কোনও শিক্ষক বা কর্মকর্তাকে পাবর্ত্য অঞ্চল (রাঙ্গামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি) এবং দুর্গম, চর ও হাওড় অঞ্চলে বদলি করা হলে বদলি করা কর্মস্থলে এক বছর চাকরির পর তিনি পুনরায় বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে তার আবেদন গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। বদলির শর্ত অনুযায়ী সময়সীমার মধ্যে পাওয়া আবেদনগুলো পর্যালোচনা করে তা নিষ্পত্তি করতে হবে।