ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশের (ইউল্যাব) উপাচার্য অধ্যাপক ইমরান রহমান বলেছেন, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সামর্থ্য এক নয়। কিন্তু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি প্রস্তুত? যেসব নতুন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি শুরু হয়েছে, তাদের অনেকেই তো ঠিকমতো কাজ শুরু করেনি। সুতরাং সবার সামর্থ্য এক না।
দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির নীতিমালা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। সোমবার (১৫ জুলাই) বিকালে রাজধানীর ডেইলি স্টার সেন্টারে শুরু হয় বাংলা ট্রিবিউনের এই আয়োজন। এতে সভাপতিত্ব করছেন বাংলা ট্রিবিউন সম্পাদক জুলফিকার রাসেল।
অধ্যাপক ইমরান রহমান বলেন, ‘আমাদের সুনাম ধরে রাখা একটি প্রশ্ন। আমরা যদি কোনও ডিপার্টমেন্টকে পিএইচডি প্রোগ্রাম দেই, সেখানে যদি মানসম্পন্ন সুপারভাইজর এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা না থাকে, তাহলে তো আমাদেরই ক্ষতি হবে। সুতরাং, আমরা নিজেরাই যাচাই করবো যে কোন ডিপার্টমেন্ট থেকে আমরা পিএইচডি দেবো কি দেবো না। না হলে তো আমাদের সুনাম ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইউজিসি যে গাইডলাইন তৈরি করছে, সেখানেই নির্দেশনা থাকবে। সেই গাইডলাইন নির্ধারণ করবে কার সামর্থ্য আছে আর কার নেই। যারা নতুন তাদের একটু সময় লাগবে শুরু করতে। তবে গাইডলাইন থাকলে তারা বুঝতে পারবে যে কী কী করা দরকার তাদের।’
বাংলা ট্রিবিউনের সম্পাদক জুলফিকার রাসেল এ সময় জানতে চান যে মানসম্পন্ন পিএইচডি পরিচালনা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ-সুবিধা আছে কিনা। এ প্রসঙ্গে ইমরান রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক কিছু আছে, অনেক কিছু তৈরি করতে হবে। এটা নির্ভর করে কোন কোন ক্ষেত্রে দরকার আছে। আমরা ইতোমধ্যে প্রস্তুতি শুরু করেছি। ভেতরে ভেতরে আমাদের প্রত্যাশা আছে—ইউজিসি দিকনির্দেশনা দেবে। তবে আমরা কাজটি শুরু করে দিয়েছি। তারপর ইউজিসি’র গাইডলাইনের সঙ্গে আমরা সমন্বয় করবো। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ফিজিক্যাল রিসোর্স, লাইব্রেরি, আন্তর্জাতিক জার্নালে অ্যাক্সেস। এর সঙ্গে ফান্ডিংয়ের বিষয় আছে। গবেষণার জন্য ফান্ডিং কোথা থেকে আসবে? এটা নিয়েও আমরা চিন্তা করছি।’
তিনি বলেন, ‘কোর্সের কার্যক্রম কী মানের করবো, সেটি নিয়েও আমরা চিন্তা করছি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে– বাংলাদেশের খুব কম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্টাল রিসার্চ হয়, ইন্ডিভিউজুয়াল রিসার্চ কম। কিন্তু বাইরে দেখেছি যে একটি টপিক নিয়েই সরকারি অর্থায়ন হোক, আর যেকোনও ফান্ডিং হোক— সেগুলো নিয়ে বছরের পর বছর রিসার্চ করে। আমাদের এখানে কিছু রিসার্চ সেন্টার আছে, যেগুলো আন্তর্জাতিক অর্থায়নে চলছে, তারা সেটি করে। আমরা তো চাইবো যে আমাদের পিএইচডি স্কলারদের সেখানে ঢোকাতে। আমরা ইতোমধ্যে একটি ফুল ফান্ডিং পেয়েছি, যেহেতু আমাদের সুবিধা নেই, সেজন্য আমাদের শিক্ষকদের পাঠাতে হয়েছে লিভারপুল ইউনিভার্সিটিতে। সেখানে ওই টাকা দিয়ে পিএইচডি করছেন তারা। আমাদের এখানে সেই সুবিধা থাকলে কিন্তু আমাদের ইউল্যাবেই হতো।’
বাংলা ট্রিবিউনের নগর সম্পাদক উদিসা ইসলামের সঞ্চালনায় সেমিনারে উপস্থিত আছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ, ইউজিসির সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের (আইইউবি) উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক শামস রহমান, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম মিয়া, ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (এনএসইউ) উপ-উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত) ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুর রব খান।
সেমিনারটি বাংলা ট্রিবিউনের অফিসিয়াল পেইজে এবং ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
পিএইচডি’র জন্য গুণগত শিক্ষার প্রস্তুতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আছে: ড. কামরুল আহসান