প্রাথমিকের বিস্কুট বিতরণ প্রকল্প: মেয়াদ বাড়লেও কার্যক্রম শুরু হয়নি

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর আগেই ‘দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পে’র মেয়াদও বেড়েছে ছয় মাস। ইতোমধ্যে বর্ধিত সময়ের তিন মাস পার হয়ে গেলেও প্রকল্পের অর্থ ছাড় হয়নি। ফলে প্রাথমিকের ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর উচ্চপুষ্টিমান নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এতে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের (ডিপিই) মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এডিপিতে বরাদ্দ ছিল না। বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে লিখেছি। বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে কার্যক্রম শুরু হবে।’

সংশ্লিষ্ট  সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ আগস্ট শর্তসাপেক্ষে গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাস প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় পরিকল্পনা কমিশন। এর এক সপ্তাহ পর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরকে (ডিপিই) জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ওই চিঠি পেয়ে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর। কিন্তু বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এর কোনও অগ্রগতি নেই।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি চেয়ে প্রস্তাব পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির বিষয়টি জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এরপর প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে ডিপিইকে ফের প্রস্তাব পাঠাতে নির্দেশ দেয় মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ জুন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ‘দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্পের’ মেয়াদ বাড়াতে পত্র দেন। পত্রে জানানো হয়, ‘দারিদ্র্য পীড়িত এলাকায় স্কুল ফিডিং প্রকল্প’ব্যয় না বাড়িয়ে ২০২১ সালের জুনে শেষ হবে।

কিন্তু প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রাখা এবং মার্চ ২০২১ থেকে ৫ বছর ৪ মাস মেয়াদে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব পরিকল্পনা কমিশনের পাঠায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ওই সময় জানায়, চলমান প্রকল্পসহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়/বিভাগের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন স্কুল ফিডিং কার্যক্রম পর্যালোচনা করে একটি কার্যকর মডেল নির্ধারণ এবং প্রক্কলনের যথার্থতা যাচাই করার জন্য কমপক্ষে এক বছর সময় প্রয়োজন হবে।

মন্ত্রণালয় জানায়, গত ১ জুন একনেক সভায় প্রকল্প সম্প্রসারণের অনুমোদন না দিয়ে চলমান মিল মোডালিটি পর্যালোচনা করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। কারণ, প্রকল্পে ফিজিবিলিটি স্টাডির জন্য বিদেশ সফরের প্রস্তাবনা থাকায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে প্রকল্পটি।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, দেশের দরিদ্র পীড়িত এলাকায় ২০১০ সাল থেকে স্কুল ফিডিং কর্মসূচি শুরু হয়। বর্তমানে ১০৪টি উপজেলায় ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ৭৫ গ্রামের এক প্যাকেট বিস্কুট বিতরণ করা হয়। বিস্কুট থেকে একজন শিক্ষার্থী প্রতিদিন ৩৩৮ কিলোক্যালরি শক্তি পায়। এছাড়া মিড ডে মিল কর্মসূচির আওতায় দেশের ১৬টি উপজেলায় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবারও দেওয়া হয়।