টিকটকে পরিচয় তারপর বিয়ে: স্বামীর খোঁজে চেয়ারম্যানের বাড়িতে নববধূ

নামাজের কথা বলে বের হয়ে বাড়ি না ফেরায় এবার স্বামীর খোঁজে নববধূ হালিমা আক্তার চেয়ারম্যানের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। টিকটক থেকে পরিচয় তারপর বিয়ে। বিয়ের পর চট্টগ্রামের একটি বাসায় থাকতেন দুজন। সেখান থেকে কৌশলে ফিরে আসেন স্বামী ওয়াকিব আলী। এরপর স্বামীর সন্ধানে মৌলভীবাজার আসেন স্ত্রী হালিমা আক্তার।

গত সোমবার (২১ এপ্রিল) স্বামীর সন্ধানে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাটারাই গ্রামে অনশন শুরু করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার ভলাকুট গ্রামের তরুণী হালিমা আক্তার। পরে সেখান থেকে হালিমা মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবু মিয়া চৌধুরীর বাড়ির সুলেমান মিয়ার ঘরে অবস্থান করছেন।

জানা যায়, মৌলভীবাজার সদর উপজেলার কাটারাই গ্রামের আফতাব আলীর ছেলে ওয়াকিব আলীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল হালিমার। গত ৬ এপ্রিল চট্টগ্রামে কোর্ট ম্যারেজের মাধ্যমে তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। 

হালিমা জানান, বিয়ের পর দুজন একটি রুম নিয়ে চট্টগ্রামে অবস্থান করছিলেন। ওয়াকিব নামাজের কথা বলে বের হলে পরবর্তীতে রুমে ফেরেনি। খোঁজাখুজি করে হালিমা ওয়াকিবের বাড়ি মৌলভীবাজারের কাটারাই আসলে ওয়াকিবের পরিবারের লোকেরা হালিমাকে বাড়িতে ঢুকতে দেননি।

হালিমা আক্তার আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ওয়াকিবকে আমার কাছ থেকে দূরে রাখার জন্য শাশুড়ি শরিফা বেগম জাদু করেছেন। ওয়াকিব আমার সঙ্গে থাকতে চায় কিন্তু তারা দেননি। এখন আমার যাওয়ার আর কোনও জায়গা নেই। আমি ওয়াকিবকে চাই। আমি তার সঙ্গে গিয়ে কালার হয়ে গেছি। এখন আমাকে কেউ নেবে না।’

ওয়াকিবের বাবা আফতাব আলী বলেন, ‘আমার ছেলে রমজানের ঈদের চার দিন পর বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এরপর তার খোঁজখবর পাইনি। সে পরিবারের অন্যান্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করতো, কিন্তু আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। ৬-৭ দিন আগে তার খালার বাড়িতে সে উঠে। খালাদের মাধ্যমে বাড়িতে আসতে চাইছিল। আমি তাকে আসতে দিইনি।’

তিনি বলেন, ‘মেয়েটি সম্পর্কে আমি জানি না। শুনেছি বাড়িতে এসেছে। আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। আর আমার ছেলের বিয়েরই বয়স হয়নি। আর এই মেয়েকে কীভাবে গ্রহণ করবো। যারা মেয়েটিকে নিয়ে আসছে আমি তাদের বলেছি ছেলে গ্রহণ করলে এটা আমি জানি না। ছেলে নিজে চলতে পারে না। আরেক জনকে রাখবে কীভাবে?’

তিনি আরও বলেন, ‘চেয়ারম্যান বাড়িতে নেই। মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে চেয়ারম্যান সাহেবের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে। মেয়েটি চেয়ারম্যানের বাড়িতেই আছে।’

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার খলিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু মিয়া বলেন, ‘গত সোমবার সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় মেয়েটি আমার বাড়িতে আসে। আমার তাড়া থাকায় সুলেমান মিয়ার ঘরে তাকে রেখে এসেছি। উভয়পক্ষ যোগাযোগ করতেছেন। আমি ব্যস্ত থাকায় মীমাংসা করতে বিলম্ব হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাতে বসে সমাধান করার চেষ্টা করবো।’