শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ২৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা-সংক্রান্ত শৃঙ্খলা বোর্ডের সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। রবিবার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সৈয়দ সলিম মোহাম্মদ আবদুল কাদির এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে শাবির বিভিন্ন বিভাগে অধ্যয়নরত ২৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে অধিকতর শাস্তির বিষয়ে আরও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।’
বহিষ্কৃতরা হলেন ছাত্রলীগের সভাপতি খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সজীবুর রহমান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইলিয়াস সানী, আকাশ আহমেদ, ফারহান হোসেন চৌধুরী, আসিফুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী তারেক হাসান, রেজাউল হক, মিদুল ইসলাম, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী শিমুল মিয়া, মারুফ মিয়া, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী তাইমুর সালেহীন, জ্বালানি এবং খনিজ প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দিন মিশু, রাউফুন জাহান, মুজাইদুল ইসলাম সাইমুন, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সৈয়দ মাজার্দী, সেলিম খাঁ, সজীব চন্দ্র নাথ, পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মজিদুল হক, ইউসুফ হোসেন টিটু, মো. রাকিবুজ্জামান, নাফিউজ্জামান, ইসমাইল, মনিরুজ্জামান মুন্না, পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী দুর্জয় সরকার নিলয়, বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের শিক্ষার্থী সুভরা রায় শ্যাম, লোকমান হোসেন এবং অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রেদোয়ান হোসেন।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৫ জুলাই কোটা সংস্কারের দাবিতে এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘রাজাকারের বাচ্চা’ মন্তব্যের প্রতিবাদে শাবির কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা মধ্যরাতে হল থেকে মিছিল বের করেন। মিছিলটি গোলচত্বর পার হয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগ হামলা চালায়। ওই হামলায় শাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন শিশির নামের এক শিক্ষার্থীর মাথা ফেটে যায় এবং অনেকে আহত হন।
এ ছাড়াও সাময়িক বহিষ্কৃতদের মধ্যে একাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রুদ্র সেন হত্যা মামলার আসামি। গত বছরের অক্টোবরে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।