ঋণ পেতে ১০ শতাংশ ঘুষই ছিল নিয়ম, ‘আঙুল ফুলে কলা গাছ’ ব্যাংক কর্মকর্তা

ব্যবসা কিংবা ব্যক্তিগত জরুরি প্রয়োজনে ব্যাংক থেকে ঋণ নেন গ্রাহকরা। বিপদের সময় এই ঋণ স্যাংকশন করিয়ে দিতে ১০ শতাংশ হারে ঘুষ নিতেন এক কর্মকর্তা। অর্থাৎ এক লাখ টাকা ঋণ মঞ্জুর হলে ১০ হাজার টাকা তাকে দিতে হতো। এটিই নিয়মে পরিণত করেছিলেন ওই কর্মকর্তা। শুধু তাই নয়, নামে-বেনামে নিজেও নিয়েছেন ঋণ সুবিধা। আর এভাবেই অল্পদিনের মধ্যেই বিশাল অর্থবিত্তের মালিক বনে গেছেন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ব্যাংকের শ্রীমঙ্গল শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক বনমালী রায়। বর্তমানে তিনি একই ব্যাংকের মৌলভীবাজার শাখার ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত। ব্যাংকের এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের পাশাপাশি আছে নারী সহকর্মী ও সুবিধাভোগীদের যৌনহয়রানিরও অভিযোগ।

বনমালী রায় ২০১৫ সাল ন্যাশনাল ব্যাংক শ্রীমঙ্গল শাখায় যোগদান করেন। এর আগে তিনি ফেঞ্চুগঞ্জ শাখায় কর্মরত ছিলেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিগত সরকারের আমলে স্থানীয় আওয়ামী লীগের কথিত নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা কাজে লাগিয়ে সহজেই দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর ধরে শ্রীমঙ্গল শাখায় দায়িত্বে থাকাকালে বিভিন্ন গ্রাহকের প্রণোদনা ও সিসি ঋণ প্রদানের বিনিময়ে উপকারভোগী গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বনমালী রায়ের বিরুদ্ধে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, অবৈধ উপায়ে টাকা কামিয়ে আজ তিনি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন! শহরতলীর মৌলভীবাজার সড়কের ৪নং পুল এলাকায় (জেটি রোড) এলাকায় কয়েক কোটি টাকা খরচ করে বিশাল জায়গা জুড়ে একটি ট্রি-প্লেক্স বাড়ি গড়ে তুলেছেন। এছাড়া অবৈধ উপায়ে অর্জন করা টাকা নামে-বেনামে বিনিয়োগ করেছেন একাধিক রিসোর্টে। চষে বেড়ান লেটেস্ট মডেলের গাড়িতে।

গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে তিনি কর্মস্থলে অনুপস্থিত। সম্প্রতি এসব অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষও। গতকাল সোমবার (২৮ আগস্ট) তাকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ করে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে যুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের বিষয়ে গত কয়েকদিন ধরে চেষ্টা করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। মোবাইল ও হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও বন্ধ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্যাংকটির সাবেক এক কর্মকর্তা জানান, বনমালী যেসব শাখায় দায়িত্ব পালন করেছেন, সেসব শাখায় গাড়ি মেরামত ও গাড়ির জ্বালানি খরচ বাবদ ভুয়া বিল-ভাউচার বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি তার বাসার এসির বিল ও ব্যক্তিগত গাড়ির জ্বালানি খরচ ব্যাংকের নামে ভাউচারের করে লুটে নিতেন ব্যাংকের টাকা। এছাড়া ব্যাংকের এসিসহ নানান সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ কারসাজি করে বিশাল অংকের টাকা লুটে নিতেন তিনি।

ঘুষের বিনিময়ে ঋণ পাস

অভিযোগ রয়েছে, শ্রীমঙ্গলে আল আমিন মার্কেটের দোতালা থেকে ব্রাঞ্চ স্থানান্তর করার নামে নতুন ভবনের মালিক স্বপন রায়ের কাছ থেকে ৭ লাখ টাকা উৎকোচ গ্রহণ করেছিলেন তিনি। তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ শহরের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছে এখন ‘ওপেন সিক্রেটের’ মতো।

সিরাজ শেখ নামে শহরের এক ব্যবসায়ী বলেন, করোনাকালে আমাকে একরকম জোর করেই ৩০ লাখ টাকা প্রণোদনা ঋণ দিয়েছে বনমালী রায়। এ ঋণ আমি নিতে চাইনি। ব্রেন ওয়াশ করে তিনি আমার বিশাল ক্ষতি করেছেন। বিষয়টি আমি কারও কাছে বলতেও পারছি না, সইতেও পারছি না।

এই ব্যবসায়ীর ভাষ্য, ‘বনমালী যে কী চতুর এবং ধান্দাবাজ, সেটা তার সঙ্গে না মিশলে কেউ বুঝতে পারবে না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে শহরের আরেক বড় ব্যবসায়ী বলেন, আমাকে কয়েক কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে বনমালী রায়। তার বিনিময়ে সে আমার কাছ থেকে অনেক টাকা উৎকোচ নিয়েছে। আমাকে দুই বারে ৬০ লাখ টাকার মতো প্রণোদনা ঋণ দিয়েছে। বিনিময়ে তাকে উপহার হিসেবে একটি প্রাইভেট কার গাড়ি দিতে হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা উৎকোচ দিতে চাইনি। তিনি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নানান শর্ত জুড়ে দিতেন। শেষে বাধ্য হয়ে সমঝোতার মাধ্যমে লেনদেন করতে হতো। তিনি আগেই বলে দিতেন যে, আমি এত টাকা ঋণ দিবো, তার বিনিময়ে এত টাকা আমাকে দিতে হবে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, ঋণ দেওয়ার নামে তিনি তাদের নিঃস্ব করে ছেড়েছেন। এসব কারও কাছে বলতেও পারছেন না। মান-সম্মানের ভয়ে কাউকে বলতেও চান না তারা।

স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানান, করোনাকালে নিজের ব্যক্তিস্বার্থ যেখানে ছিল, সেই ব্যক্তিদের ৩০ লাখ থেকে শুরু করে ৬০ লাখ টাকাও প্রণোদনা ঋণ দিয়েছেন। নিজের প্রভাব খাটিয়ে ঋণ দেওয়ার নামে অবৈধ টাকা উপার্জন করে নামে-বেনামে বিভিন্ন রিসোর্ট ও বাসা-বাড়ি কিনেছেন।

কিছুদিন আগে কথা হয় হরিপুর অয়েল এন্টারপ্রাইজের প্রোপাইটার আব্দুল মুকিত চৌধুরীর সঙ্গে। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, চারটি দোকান দেখিয়ে কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন। ব্যাংকের সাবেক দুই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার নাম বলে ২ কোটি টাকার ঋণের জন্য তার কাছে ব্যাংক ম্যানেজার বনমালী ২০ লাখ ঘুষ নেন।

সম্প্রতি মারা গছেন মুকিত চৌধুরী। পরিবারের অভিযোগ, সেই টাকার শোক সইতে না পেরেই মারা গেছেন তিনি। অবশ্য জীবদ্দশায় অনেক তথ্যই এই প্রতিবেদককে বলে গেছেন তিনি।

নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে নিজেই উপকারভোগী

অভিযোগ আছে, শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দীর্ঘদিন চাকরির সুবাদে শহরের প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ভানুলাল রায়, কথিত সুশীল সমাজের নেতা অবিনাশ আচার্য ও আওয়ামী লীগ নেতা জহর তরফদার, সাবেক কৃষিমন্ত্রীর নামে কলেজের অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিকাশ দেব বাপনসহ বড় একটি চক্র গড়ে তোলেন বনমালী রায়। সেই চক্রের হোতাদের মাধ্যমে তার আধিপত্য বিস্তার করতে থাকেন। ওই চক্রের ‘বন্ধন সমিতি’ নামে একটি ক্রেডিট ব্যবসার মাধ্যমে নামে-বেনামে গ্রাহকদের ঋণ দিয়েছেন।

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, শাখা ব্যবস্থাপক বনমালী রায়ের পরিবারের সদস্যদের নামে শ্রীমঙ্গল উপজেলার রাধানগর এলাকায় ‘অরণ্যে দিন-রাত্রি’ রিসোর্টে শেয়ার রয়েছে। সেই রিসোর্টের জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকাবস্থায় তিনি মৌলভীবাজার শাখা থেকে ১ কোটি টাকার ঋণ প্রদান দেন ওই জমি মর্গেজ নিয়ে। ওই রিসোর্টের স্বত্ত্বাধিকারী কুমকুম হাবিবা ও শামিমা আক্তারের দুটি বুটিক হাউজের নামেও সিসি ঋণ দেওয়া হয়। জেন্সিস অ্যান্ড জেনিফার নামের বুটিক হাউজের ঠিকানা হিসেবে  শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের পোস্ট অফিস সড়কের এম সাইফুর রহমান মার্কেটের ঠিকানা ব্যবহার করা হয়। কিন্তু খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই নামে ওই মার্কেটে আদৌ তাদের কোনও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই নেই। ধারণা করা হচ্ছে, বড় অংকের উৎকোচের বিনিময়ে তিনি নাম ঠিকানা-বিহীন প্রতিষ্ঠানের নামে এ ঋণ প্রদান করেন।

এভাবে আরও ৮ থেকে ১২টি কৃষি ঋণ দেওয়ারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। যেগুলোর ঠিকানার সঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, এসব ঋণের প্রকৃত উপকারভোগী তিনি নিজেই।

ব্যাংকটির একটি সূত্রে জানা গেছে, শ্রীমঙ্গল শহরের সপ্তডিঙ্গা এন্টারপ্রাইজ, দুলাল হাজী, সিরাজ শেখ, হরিপুর অয়েল, অরণ্যের দিনরাত্রি ও জেন্সিস অ্যান্ড জেনিফার বুটিক হাউজসহ কয়েশ ব্যক্তিকে মোটা অংকের নানা স্কিমের ঋণ দিয়েছেন। কিন্তু বাস্তবে এসব ঋণের অনেকগুলোরই প্রকৃত উপকারভোগী ব্যাংকের ম্যানেজার বনমালী রায় নিজেই। এভাবেই অল্পদিনে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হয়েছেন তিনি।

নারী কর্মকর্তা ও সেবাগ্রহীতাদের হয়রানির অভিযোগ

বনমালী রায়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় নারী সহকর্মীকে উত্ত্যক্ত করারও অভিযো উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তিনি তার অধীন নারী সহকর্মীদের নানাভাবে কাছে পেতে চাইতেন। কেউ তার কথা মতো না চললে তাকে সবসময় মানসিকভাবে চাপে রাখতেন। পুরুষ স্টাফ থাকা সত্ত্বেও নারী সহকর্মীদের দিয়ে নগদ টাকা পাঠাতেন সিলেটে। 

শ্রীমঙ্গল থানার বিপরীতে পাশে অবস্থিত আল-আমিন মার্কেটের দোতালায় ব্যাংকের শাখা থাকাবস্থায় তার অধীনে এক নারী স্টাফকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। ব্রাঞ্চে পুরুষ স্টাফ থাকা সত্ত্বেও রাত ১০-১১টা পর্যন্ত অফিসে বসিয়ে রাখতেন তিনি ওই নারী কর্মীকে। পরে ওই নারী সেচ্ছায় চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে বিদেশে পাড়ি দেন। 

ন্যাশনাল ব্যাংক শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার শাখার সাবেক ওই নারী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দীর্ঘ ছয় বছর তার অধীনে ব্যাংকে কর্মরত থাকা অবস্থায় যে মানসিকভাবে যন্ত্রণা সহ্য করতে হয়েছে, এতে আমি ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। বনমালী রায় বিভিন্নভাবে আমাকে ইনসাল্ট করতো। কাজ না থাকলেও রাত ১০-১১ পর্যন্ত অফিসে বসিয়ে রাখতো। শাখার যাবতীয় কাজ আমাকে দিয়ে করাতো। অফিসে পুরুষ স্টাফ থাকা সত্ত্বেও তিনি আমার ঘাড়ে সব চাপাতেন। তার অনিয়মের কোনও শেষ নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘তার সঙ্গে বসে যদি রোমান্টিক গল্পসল্প করতাম, তাহলে হয়তো আমাকে এসব যন্ত্রণা দিতো না। কিন্তু আমিতো এই স্বভাবের নারী নই। যার ফলে আমি মানসিক যন্ত্রণা নিয়ে চাকরি থেকে অব্যাহতি নিতে বাধ্য হই। সেই মানসিক যন্ত্রণা থেকে লিভারের সমস্যাও হয়েছে।’ বিদেশের হাসপাতালে এখনও তাকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন ওই নারী কর্মকর্তা।

সম্প্রতি ব্যাংকের আরেক নারী কর্মকর্তা মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে রাত ১০টার দিকে ব্রাঞ্চেই অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে।

এমনকি ব্যাংকের নারী গ্রাহকদেরও বিভিন্ন সময় হয়রানি করেছেন বলেও অভিযোগ আছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকের সুন্দরী নারী গ্রাহদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে তার আগ্রহ বেশি থাকতো। তিনি সুযোগ বুঝে নানা কুপ্রস্তাব দিতেন নারী ঋণগ্রহীতাদের। আবার অনেক উপকারভোগীকে লোভ দেখিয়ে তাদের নির্দিষ্ট কিছু রিসোর্টে নিয়ে মনোরঞ্জন করারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

অভিযোগের বিষয়ে যা বলছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে ব্যাংকের ম্যানেজার বনমালী রায়ের মোবাইল ফোনে (০১৭**-***২০৮) একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হয় ন্যাশনাল ব্যাংক সিলেট বিভাগের রিজিওনাল ম্যানেজার মো. সাইফুজামানের সঙ্গে। তিনি মোবাইল ফোনে বলেন, ‘একজন শাখা ব্যবস্থাপকের অনেক ক্ষমতা থাকে। তবে তার বিরুদ্ধে এই ক্ষমতার অপব্যাবহারের যে অভিযোগ উঠেছে, সে বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্যের নামে ম্যানেজার নিজেই যদি উপকারভোগী হন, সেটা অডিটের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে।’

ন্যাশনাল ব্যাংক (পিএলসি) ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শেখ আক্তার উদ্দিন আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ম্যানেজারের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। তিনি যেখানে যেখানে কর্মরত ছিলেন, শিগগিরই সেখানে তদন্ত টিম যাবে। তদন্তে গেলে সব তথ্য বেরিয়ে আসবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমি যোগদান করেছি ২০২১ সালের মে মাসে। আমার যোগদানের পরও কিছুদিন দেশের বাইরে ছিলাম। আমি এখানে আসার পর দুর্নীতিবাজদের শাস্তির মাত্রা বেড়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংকের ইতিহাসে সেটা এর আগে ছিল না। আমরা দুর্নীতিবাজদের জন্য জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছি। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না ইনশাআল্লাহ। শাখা ব্যবস্থাপক বনমালী রায়ের বিষয়ে ইতিমধ্যে আমাদের আইসিটিকে বলেছি পরিদর্শন করে স্পেশাল ইনস্পেকশনের জন্য। স্পেশাল ইনস্পেকশন যখন হয় তখন একেবারে ইন অ্যান্ড আউট সমস্ত দেখে তারা মোটামুটি যাচাই-বাছাই করে। তখন কার অপরাধ কতটুকু ছিল, কে কোনটা করেছে সেটা বেরিয়ে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বনমালী যে দুটি শাখায় কর্মরত ছিল, সে দুটি শাখাতেই ইনভেস্টিগেশন হবে। ডকুমেন্টারি এভিডেন্স দিয়ে বিচার করবো, কার সঙ্গে সখ্যতা ছিল, সেটা দেখবো না। আমাদের এখন যে চেয়ারম্যান স্যার, উনি খুবই শক্ত। উনি বলেছেন, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্যতা প্রমাণ পাওয়া যাবে সঙ্গে সঙ্গে ক্রিমিনাল কেইস করা হবে। এতদিন অর্থদণ্ড দিয়েছি, এখন এগুলোর পাশাপাশি সরাসরি ক্রিমিনাল কেইস করতে হবে এবং সেই ধারা অব্যাহত আছে।