জামিন পাওয়ায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সংসদ সদস্য এম এ মান্নান হাসপাতাল ছেড়েছেন। বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ২টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তির সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ (ছাড়পত্র) দিয়েছে চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের জামিন হওয়ায় তাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়েছে মেডিক্যাল বোর্ড।’
এর আগে, তার চিকিৎসার জন্য ৬ সদস্যবিশিষ্ট মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. শিশির রঞ্জন চক্রবর্তীকে প্রধান করে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এরপর সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে তাকে চিকিৎসকরা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করেন। হাসপাতালের তৃতীয় তলার ১৩ নম্বর কেবিনে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার সাখাওয়াত হোসেন রুবেল জানান, জামিনের কাগজপত্র পর্যালোচনা করার পর সাবেক মন্ত্রী মান্নানকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দেওয়া হয়।
এদিকে বুধবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হেমায়েত উদ্দিন সাবেক মন্ত্রী এম এ মান্নানের জামিন মঞ্জুরের আদেশ দেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আবদুল হামিদ বলেন, ‘অসুস্থতা ও বয়স বিবেচনায় আদালত এম এ মান্নানের জামিন দিয়েছেন। আদালতের রায়ে আমরা খুশি।’
জানা গেছে, গত ২ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্জন কুমার মিত্রের আদালতে দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের এরোয়াখাই গ্রামের হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট, সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, সাবেক সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক, রনজিত চন্দ্র সরকার, মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত পলিন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, রেজাউল করিম শামীম, সুনামগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র নাদের বখতসহ ৯৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ২০০ জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলায় এম এ মান্নানকে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন আদালতে পাঠানো হয়। এরপর থেকে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে ছিলেন তিনি। ২৩ সেপ্টেম্বর আদালতে তার জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু জামিন মঞ্জুর করা হয়নি।
সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে থাকা অবস্থায় ৫ অক্টোবর সকালে এম এ মান্নান অসুস্থতাবোধ করেন। পরে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল নেওয়া হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসকরা দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন।