সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামে বিয়ে, জন্মদিন বা অন্য কোনও অনুষ্ঠানে রাতের বেলায় উচ্চশব্দে গান-বাজনা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রামের কেউ এর ব্যতিক্রম করলে তাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা হবে। শনিবার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাতে উপজেলা সদরের চিকসা গ্রামবাসী স্থানীয় মাতব্বরদের নিয়ে এ নিয়ম চালু করেন।
জানা যায়, বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে গান-বাজনা করার কারণে রোগী, বৃদ্ধ ও শিশুদের সমস্যা হয়। তা ছাড়া ইসলাম ধর্মে গান-বাজনা নিষিদ্ধ করা আছে। তবে এ বিষয়ে গ্রামের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
তারা বলেন, ‘গ্রামের মুসলিম ভাইয়েরা একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শুনেছি। আমাদের তারা এ বিষয়ে কিছু বলেননি। তবে উচ্চশব্দে গান-বাজনাতে হার্টের রোগী ও বৃদ্ধদের কষ্ট হয়। এ ব্যাপারে আমাদের কোনও সমস্যা নেই।’
এ বিষয়ে ৯ নম্বর ওয়ার্ড চিকসা গ্রামের ইউপি সদস্য (মেম্বার) শফিকুল হক বলেন, ‘আমাদের গ্রামটি সদর ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় গ্রাম। গ্রামে হিন্দু-মুসলিম দুই ধর্মের লোক বসবাস করেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ মুসলিম পরিবার বাস করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বড় বড় সাউন্ড বক্স বাজিয়ে গ্রামের মানুষ বিয়ে, জন্মদিন কিংবা সুন্নতে খতনা অনুষ্ঠান পালন করে। এতে হার্টের রোগী, বৃদ্ধ ও শিশুদের অনেক কষ্ট হয়। গ্রামের সম্মানিত মাতব্বরদের নিয়ে সম্মিলিতভাবে এসব অনুষ্ঠানে গান-বাজনা নিষিদ্ধ বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কেউ যদি না মানে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এটা শুধু মুসলিম পরিবারের জন্য কার্যকর হবে। আর এই গ্রামে বসবাসকারী হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাইদের জন্য এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।’
তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জুনাব আলী জানান, উচ্চশব্দে গান-বাজনা করলে অনেকেরই সমস্যা হয়। তা ছাড়া উচ্চশব্দে গান-বাজনার ক্ষেত্রে আইনি বাধ্যবাধকতাও আছে। চিকসা গ্রামের মাতব্বররা গান-বাজনা নিষিদ্ধ করেছেন। এটি একটি সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। চিকসা একটি বড় গ্রাম। এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ মুসলিম। এ বিষয়ে কারও কোনও সমস্যা হওয়ার কথা না। এখন পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।