সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে মোট ৫টি নাশকতার মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় এ পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে। এজাহারে অজ্ঞাত ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এদিকে চলমান একাধিক মামলায় গ্রেফতার আতঙ্কে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এতে তাদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় সময় পার করছেন। এমনটি জানিয়েছেন জেলার বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ৭টি উপজেলার মধ্যে কুলাউড়া থানায় ১টি, বড়লেখা থানায় ১টি ও মৌলভীবাজার মডেল থানায় ৩টিসহ বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের নামে মোট ৫টি মামলা হয়েছে। ওই ৫টি মামলায় এজাহারনামীয় ও অজ্ঞাত মিলে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫টি মামলায় ১৫ জনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে জেলা জামায়াতের আমির ইঞ্জিনিয়ার শাহেদ আলী, জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মামুন পারভেজসহ বিএনপি-জামায়াতের পৌর ও ইউনিয়ন কমিটির নেতাকর্মীরা রয়েছেন।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক মেয়র ফয়জুল করিম ময়ুন বলেন, ‘দেশে চলমান ঘটনাকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কয়েকটি মামলা হয়েছে শুনেছি। বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। কে বা কারা মামলা করেছে কাদের আসামি করা হয়েছে এসব বিষয়ে এখনও কিছু জানা হয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘মামলা ও গ্রেফতারের ভয়ে নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না। জেলাজুড়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা এমনটিই জানাচ্ছেন।’
মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো. ইয়ামীর আলী বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় পুলিশ জেলা জামায়াতের আমিরকে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে। তারা একটি বাহিনীকে ব্যবহার করে অন্যায়ভাবে জুলুম অব্যাহত রেখেছে। দেশজুড়ে শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি কোটা সংস্কারের আন্দোলনের সঙ্গে জামায়াত-শিবির জড়িত না থাকলেও তাদের দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। দেশে এতগুলো মেধাবী শিক্ষার্থী ও সাধারণ নিরীহ জনগণকে হত্যা করে সরকার এখন বিরোধী দলের ওপর দায় চাপিয়ে নিজেদের অপরাধ আড়াল করতে চাইছে এবং আমাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দিয়ে ঘরছাড়া করেছে।’
এ বিষয়ে মৌলভীবাজারের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মনজুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ৫টি মামলা করা হয়েছে। যে যে উপজেলায় বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটেছে ওই উপজেলাতেই মামলা হয়েছে। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ছাড় দেওয়া হবে না কাউকে।