পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়ির একটি ঘরে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। টিনশেডের ওই ঘরে খড় ও লাকড়ি রাখা হতো। আগুনে ঘরটি পুড়ে গেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ সাতখামার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে বোদা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টায় চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে অন্তত লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তবে সাদ্দাম হোসেনের মূল ঘরের কোনও ক্ষতি হয়নি। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। বোদা উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মো. রায়হান ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়ির বাইরের উঠানে থাকা খড় ও লাকড়ি রাখার টিনশেডের ঘরটিতে আগুন জ্বলতে দেখে চিৎকার শুরু করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে পরিবারের সদস্যরা ও স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করার পাশাপাশি বোদা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। খবর পেয়ে বোদা ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডের সময় পলাতক সাদ্দাম হোসেনের মা-বাবাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা বাড়িতে ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের দিন বিক্ষুব্ধ জনতা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের গ্রামের বাড়িটি পুড়িয়ে দেন। এরপর ওই বাড়ির তিনটি কক্ষ মেরামত (সংস্কার) করে তার মা-বাবা ও বড় ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা সেখানে বসবাস করছেন।
সাদ্দাম হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, রাত তখন প্রায় ১টা ২০ মিনিট। আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। আমাদের এক ভাতিজা আগুন আগুন করে পাশের বাড়ি থেকে চিৎকার করছিল। পরে উঠে দেখি আমাদের বাইরের উঠানে থাকা খড়ের ঘরটিতে আগুন জ্বলছে। কীভাবে আগুন লেগেছে জানি না। এখানে তো আগুন লাগার মতো না, মনে হচ্ছে মানুষে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। তবে ওই সময় পাশের রাস্তা দিয়ে একটা দ্রুতগতির মোটরসাইকেলে অপরিচিত দুজন যেতে যেতে গ্রামের লোকজনকে বলছিল, ‘সাদ্দামের বাড়িতে আগুন লাগছে, তোমরা যাও।’
আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘ওই ঘরে ১০ বিঘা জমির ধানের খড় রাখা হয়েছিল। সেই সঙ্গে সেখানে কিছু লাকড়ি ছিল। আগুন লাগার খবর পেয়ে সেনাবাহিনী আর ফায়ার সার্ভিস এসে নিভিয়ে দিয়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মো. রায়হান ইসলাম বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সেনাবাহিনীর সহায়তায় প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন সম্পূর্ণ নিভিয়ে ফেলি। সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির বাইরের উঠানের ওই খড় ও লাকড়ি রাখা ঘরটি ছাড়া আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় এক লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে এখনও কিছু জানা যায়নি।’