দুদিন পর পরীক্ষা শুরু, এক প্রতিষ্ঠানের ৩৪ শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র ভুলে ভরা

নীলফামারী সদরের কানিয়াল খাতা দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসা প্রধানের গাফিলতির কারণে ৩৪ শিক্ষার্থীর দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) সরেজমিনে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা গেছে, ভুলে ভরা প্রবেশপত্র নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ওই মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার ৩৪ শিক্ষার্থী। তাদের প্রবেশপত্রে কারও নামের বানান, কারো জন্ম তারিখ ভুল, আবার কারও প্রবেশপত্রে দেওয়া হয়েছে অন্যজনের ছবি। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

শিক্ষার্থী লিপন ইসলাম বলেন, ‘আজকে আমাদের প্রবেশপত্র দেওয়া হবে বলে আসতে বলা হয়। কিন্তু প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে দেখি, আমার প্রবেশপত্রে আরেকজনের ছবি লাগানো। আমার ছবি নেই। আমি এই প্রবেশপত্র দিয়ে কেমনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবো। ভেতরে প্রবেশ করাতো দূরের কথা গেটেই আটকে দেবে।’

নুরজামান ইসলাম নামে আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধনসহ আমার সব কাগজপত্রে আমার মায়ের নাম লেখা আছে মমেনা বেগম। কিন্তু আজকে প্রবেশপত্র হাতে পেয়ে দেখি আমার মায়ের নাম হয়েছে মমবানা বেগম। স্যারকে এসব ভুলের কথা বললে, তিনি জবাবে বলেন এগুলো কোনও ভুল হইলো।’

নাঈম ইসলাম নামে আরেক পরীক্ষার্থী বলেন, ‘আমার জন্ম তারিখ ১২ আগস্ট ২০০৮। কিন্তু আমার প্রবেশপত্রে আমার জন্ম তারিখ লেখা হয়েছে ১০ আগস্ট ২০০৮। প্রত্যেকের প্রবেশপত্রে ভুলে ভরা। এই বিচার কাকে দেব? পরে এগুলো সংশোধন করা আমাদের জন্য অনেক কষ্টকর হবে। আমরা অতিদ্রুত প্রবেশপত্র সংশোধন চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে কানিয়াল খাতা দ্বি-মুখী দাখিল মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট সাবেদ আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা নিয়মিত মাদ্রাসায় না আসায় কিছু ভুল হয়েছে। যেগুলো খুব বড় ধরনের ভুল নয়। এগুলো সংশোধন করার জন্য বোর্ডের দরজা সব সময় খোলা আছে। আমরা এসব ঝামেলা ঠিক করে নেবো।’

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে ঈদুল ফিতরের আগেই প্রবেশপত্র শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। যাতে করে কোনও ভুল থাকলে তা যে সংশোধন করা যায়। পরীক্ষার প্রবেশপত্রে যে ভুলগুলো হয়েছে এর সম্পূর্ণ দায়ভার প্রতিষ্ঠান প্রধানকেই নিতে হবে।’

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘এ বিষয়ে এডিসিকে (শিক্ষা) প্রবেশপত্রগুলো দ্রুত সংশোধন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি। আশা করি, সংশোধন হয়ে যাবে।’

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) থেকে শুরু হচ্ছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা।