রোজা আসতেই লেবুর দাম দ্বিগুণ

পবিত্র রমজান মাসকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে চলছে রোজাদারদের প্রস্তুতি। এদিকে, বাজারের কেনাকাটা সেরে নিতে ব্যস্ত লোকজন। কিছু পণ্যের বাজার ঠিকঠাক থাকলেও বেড়েছে লেবু, শসা, বেগুন, ছোলা, চিনি, বেসনের দাম। ভোজ্যতেল নিয়ে কাটেনি শঙ্কা।

প্রতিবারই রোজা এলেই বাড়ে লেবুর দাম। গেল এক সপ্তাহে ৭০০-৮০০ টাকায় পাওয়া যেত ১০০ লেবু। এখন সেই লেবু ৯০০-১০০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। গত ১৫ দিন আগে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হয়েছিল ১৫ থেকে ২০ টাকায়। এখন সেই লেবুর হালি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

নীলফামারী কিচেন মার্কেটের লেবু বিক্রেতা সন্তোষ কুমার রায় বলেন, আগামীকাল রবিবার থেকে রোজা শুরু হওয়ার কারণে হঠাৎ বাজারে লেবুর চাহিদা অনেক বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় সরবরাহ হচ্ছে না। স্থানীয় বাগানে কেবল মুকুল ধরেছে, তাই সরবরাহ কম এ কারণে দাম বেড়েছে। গাছে সব কড়া (মুকুল), বড় লেবু নাই। তবে আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে কিছুটা সরবরাহ বাড়বে বলে আশা করেন তিনি।

lemon4

একই বাজারের লেবু বিক্রেতা এমদাদুল হক বলেন, বৃষ্টি নাই, গাছে মুকুল কম। চৈত্র-বৈশাখ মাসে বাজারে প্রচুর সরবারহ হবে, তখন এই সংকট কেটে যাবে দামও কমবে। লেবুর ভালো ফলন হলেও প্রতি বছরে রোজার মাসে লেবুর চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে একটু দাম বেড়ে যায়। তবে খেজুর, ছোলা, মুড়ি, গুড় এসব পণ্যের দাম এখনও বাড়েনি।

শনিবার (১ মার্চ) নীলফামারী শহরের বড় বাজার, কিচেন মার্কেট, সাহেব বাজার, উকিলের মোড়, গাছবাড়ী বাজার, কালিতলা বাজার, আনন্দ বাবুর পুল  ঘুরে  বাজারের এমন চিত্র দেখা গেছে।

গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ দামে লেবু বিক্রি হচ্ছে। কিছু দিন আগেও এলাচি লেবুর হালি ছিল ২০ থেকে ২৫ টাকা। এখন সেই লেবু ৩৮ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জেলা শহরের বড় বাজারে শরবতি লেবু প্রতি হালি ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি হালি বাতাবি লেবু ৪৫-৫০ টাকা দাম হাঁকছেন দোকানদাররা।

lemon1

বিক্রেতারা বলছেন, রোজার কারণে হঠাৎ বাজারে লেবুর চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু সে তুলনায় লেবুর সরবরাহ বাড়ছে না। এ কারণে দাম বেড়েছে। এখন গাছে ফুল আসছে, কিছু দিনের মধ্যে ফলও আসবে। অবশ্য এটা লেবুর মৌসুম নয়। ইফতারির আরেকটি অনুষঙ্গ হলো বেগুন ও শসা। জেলা শহরের কিচেন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, প্রকারভেদে গোল বেগুন প্রতি কেজি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩৮ থেকে ৪০ টাকায়, আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকা কেজিতে।

ওই মার্কেটের শসা বিক্রেতা আরাফাত আলী জিম ও সাকিব আল হাসান বলেন, রোজার মাসে শসা ও বেগুনের চাহিদা বেড়ে যায়। প্রতি কেজি দেশি শসাতে ৫-১০ টাকা বেড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে হাইব্রিড শসা ২৫-৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১৫ দিন আগে বেগুন ও শসা কেজিতে ৮-১০ টাকা কম দামে বিক্রি হয়েছিল।

তবে বাজারে স্থিতিশীল রয়েছে খেজুর, ছোলার দাম। কিন্তু গত বছর রোজার মাসে খেজুর, ছোলার দাম প্রচুর বেড়েছিল। তবে এবার একটু ব্যতিক্রম। এ বছর রমজানের আগে সরকার খেজুর আমদানিতে শুল্ক কমিয়েছে বলে বেড়েছে আমদানি।

lemon3

জেলা শহরের বড় বাজারের খেজুর ব্যবসায়ী পেয়ারুল ইসলাম জানান, গত এক মাসে প্রকারভেদে কেজিতে খেজুরের দাম কমেছে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে প্রতি কেজি জায়েদি খেজুর ২২০-৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত বছর ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। এ ছাড়া সাধারণ মানের খেজুর ১১০০-১২০০ টাকা, আজওয়া ৫০০-৫৬০ টাকা ও মেডজুল ৮৫০-৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

জেলা কর্মকর্তা এ টি এম এরশাদ আলম খাঁন বলেন, রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষা ও দ্রব্য মূল্য স্থিতিশীল রাখতে জেলা প্রশাসন সব সময় মনিটরিং করছে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মিটিং চলছে। আশা করি, রমজানে বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে।