হাতকড়া নিয়ে আসামি পালানোর ঘটনায় ওসিকে বদলি, ৬ পুলিশ সদস্য প্রত্যাহার

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে পুলিশের ভ্যান থেকে হাতকড়া পড়া অবস্থায় লাফ দিয়ে মাদকসহ আটক স্বামী-স্ত্রী পালিয়ে গেছে। রবিবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের বাবুরহাট বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুনিরুল ইসলামকে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযানে যাওয়া ভূরুঙ্গামারী থানার এক উপপরিদর্শক (এসআই) ও এক সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

ভূরুঙ্গামারী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. মাসুদ রানা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পালিয়ে যাওয়া মাদক কারবারি হলো- হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী সমেলা বেগম। তারা উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকার বাসিন্দা। অভিযানে তাদের কাছে থাকা ১৬২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। 

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলার চর ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের বাবুরহাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ‘মাদক ব্যবসায়ী’ হাফিজুর রহমান ও তার স্ত্রী সমেলা বেগমকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছে থাকা ১৬২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তাদের পুলিশ ভ্যানে তুলে নিয়ে থানায় আসার সময় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের আত্মীয়দের বাধার মুখে পড়ে পুলিশ। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করার সময় সুযোগ বোঝে আসামি হাফিজুর ও তা স্ত্রী ভ্যান থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় হাফিজুরের হাতে হাতকড়া ছিল। সোমবার (৬ জানুয়ারি) বিকালে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত পলাতক হাফিজুর ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি হাতকড়াও।

এদিকে এ ঘটনায় ভূরুঙ্গামারী থানার ওসি মুনিরুল ইসলামকে জেলা বিশেষ শাখায় (ডিএসবি) বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে অভিযানে থাকা পুলিশের এসআই আরিফ মাহমুদ আপেল, এএসআই আলমগীর হোসেন সোহাগ ও চার কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, মাদক উদ্ধারের ঘটনায় হাফিজুর ও তার স্ত্রীকে আসামি করে মামলা হয়েছে। একই সঙ্গে পুলিশের কাজে বাধাদান ও আসামি ছিনতাইয়ের অভিযোগে পৃথক আরও একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭০-৮০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ভূরুঙ্গামারী থানার উপপরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের ভ্যান থেকে হাতকড়া পড়া অবস্থায় আসামি ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তারা এখনও পলাতক রয়েছে। হাতকড়াও উদ্ধার হয়নি। পুলিশের কাজে বাধাদান ও আসামি ছিনতাইয়ের অভিযোগে হওয়া মামলায় আনোয়ার হোসেন ও তার বাবা আব্দুস সালাম নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।’

এএসপি মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘ওসিকে বদলি করা হয়েছে। এক এসআই ও এএসআইসহ ছয় পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে।’