কুড়িগ্রামের উলিপুর থানা চত্বরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় যুবদল নেতা আশরাফুল আলমের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এঘটনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি হয়দার আলী মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুলসহ ৭৮ জন নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪০ থেকে ৫০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাতে জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাফর সোহেল রানার স্ত্রী নাজমা বেগম বাদী হয়ে উলিপুর থানায় মামলাটি করেন। উলিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জিল্লুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি, ঘরে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সম্পদের ক্ষতিসহ ভয়ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এজাহারে সূত্রে আরও জানা গেছে, রাজনৈতিক বিরোধের জেরে গত ২৭ ডিসেম্বর রাতে আসামিরা যোগসাজশে আবু জাফর সোহেল রানার বাড়িতে হামলা করে। তারা ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়ে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাড়িতে থাকা স্বর্ণালংকার ও দুটি গরু নিয়ে যায়। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
প্রসঙ্গত, গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় উলিপুর থানা চত্বরের গোলঘরে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী দুই দলে বিভক্ত হয়ে দুই কিশোর-কিশোরীর প্রেমঘটিত বিরোধ মীমাংসায় বসেন। এসময় দুপক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশরাফুল আলম তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে আশরাফুল অসুস্থ হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। পরে দ্রুত উলিপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আশরাফুলের মৃত্যুর ঘটনার পরপর জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উলিপুর শহরের বাসিন্দা আবু জাফর সোহেল রানা এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফিরোজ কবির কাজলের বসতবাড়িতে আগুন দেয় প্রতিপক্ষের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। একই সময়ে উপজেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামের মালিকানাধীন শুভেচ্ছা নামক রেস্টুরেন্টে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
যুবদল নেতা আশরাফুলকে হত্যার অভিযোগ এনে ঘটনার রাতেই উলিপুর থানায় মামলা করেন তার বাবা আয়নাল হক। মামলায় সোহেল রানা ও কাজলসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আর ২০/২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ওই মামলায় সুলতান আহমেদ নামে এজাহার নামীয় এক আসামিকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অন্যরা পলাতক রয়েছে।
মামলার অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপজেলা বিএনপির সভাপতি হায়দার আলী মিয়াকে ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ওসি জিল্লুর রহমান বলেন, ‘মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’