চার বছর পর চালু হচ্ছে পঞ্চগড় চিনিকল, সারজিসের ফেসবুক পোস্ট

চার বছর বন্ধ থাকার পর পঞ্চগড় সুগার মিল পুনরায় চালুর উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের (বিএসএফআইসি) অধীন ৬টি (পঞ্চগড়, রংপুর, পাবনা, কুষ্টিয়া, সেতাবগঞ্জ ও শ্যামপুর) চিনিকলের আখ মাড়াইয়ের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মাড়াই স্থগিতকৃত চিনিকলসমূহ পুনরায় চালু করার জন্য ও লাভজনকভাবে চালানোর নিমিত্তে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত টাস্কফোর্সের সুপারিশ ও মতামতের আলোকে পর্যাপ্ত আখপ্রাপ্তি সাপেক্ষে প্রথম পর্যায়ে শ্যামপুর, সেতাবগঞ্জ চিনিকল, দ্বিতীয় পর্যায়ে পঞ্চগড় ও পাবনা চিনিকল এবং তৃতীয় পর্যায়ে কুষ্টিয়া ও রংপুর চিনিকলের মাড়াই কার্যক্রম পুনরায় চালুকরণের লক্ষ্যে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হলো।

বিষয়টি নিয়ে এদিন দুপুর ১টার দিকে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম তার ফেসবুক আইডিতে পঞ্চগড়বাসীকে উদ্দেশ করে লিখেছেন, ‘পঞ্চগড়বাসীর জন্য বিশাল সুখবর! চালু হচ্ছে পঞ্চগড় সুগার মিল। মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন প্রকাশ। এবার সবাই জোরেশোরে কুশার লাগাও...।’

জানা যায়, প্রায় ২১ দশমিক ২৮ একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে উত্তরের জেলার একমাত্র ভারী শিল্প চিনিকল। ২০০৫-০৬ অর্থবছরে নানা কারণে লোকসান গুনতে শুরু করে কারখানাটি। ২০২০ সালে এসে লোকসানে পড়ে দেশের ছয়টি কারখানার সঙ্গে পঞ্চগড় চিনিকলেরও আখ মাড়াই কার্যক্রম স্থগিত করে সরকার। তখন থেকে আখ মাড়াই বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে গত ৪ বছর ধরে মিলের পুরো এলাকাজুড়ে ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে আখ মাড়াই ও পরিবহনের মূল্যবান যন্ত্রপাতি।

পঞ্চগড় চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার চিনিকলটি চালুর উদ্যোগ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। ঠাকুরগাঁও চিনিকলের তত্ত্বাবধানে পঞ্চগড়ে আখ চাষ হচ্ছে। ৩১টি আখ ক্রয় কেন্দ্রের মধ্যে ৮টি চালু রয়েছে। বর্তমানে ৭৯২ একর জমিতে আখ আবাদ হচ্ছে। এখন আখ মাড়াইয়ের মৌসুম চলমান। মাঠে ২০০ একর জমিতে আখ চাষ হয়েছে। আখচাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হবে। যাকে কৃষকরা আখ চাষে আগের সেই উদ্যমে আসে।

পঞ্চগড় চিনিকলের তেঁতুলিয়ার সিডিএ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘চিনিকল চালুর প্রজ্ঞাপনের বিষয়টি বিকালে শুনেছি। পঞ্চগড়ে আগে ৫০-৬০ হাজার মেট্রিক টন আখ আবাদ হতো। বর্তমানে ১৫-২০ হাজার মেট্রিক টন আবাদ হচ্ছে। আখ ক্রয় কেন্দ্রগুলো চালু করে দেওয়া হলে আখ আবাদ বেড়ে যাবে। চিনিকল চালুর বিষয়টি নিয়ে আমরা মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি।’

পঞ্চগড় সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ছয়টি চিনিকল চালুর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। গত নভেম্বরে শিল্প উপদেষ্টা মহোদয় এটি পরিদর্শন করে গেছেন। বর্তমানে এ জেলায় ৭৯২ একর জমিতে আখ আবাদ হচ্ছে। ৩১টি আখ ক্রয় কেন্দ্রের মধ্যে ৮টি চালু রয়েছে। এখন তো আখ মাড়াইয়ের মৌসুম। মাঠে ২০০ একর জমিতে আখ রয়েছে। আখ রোপণের সময় শুরু হয়েছে। আমরা চাষিদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি।’