রবিন্দ্রনাথ কর্মকার (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে নির্যাতনের অভিযোগে স্ত্রী ও শাশুড়িসহ তিন জনের বিরুদ্ধে যৌতুক নিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে গাইবান্ধার একটি আদালতে। মামলাটি আমলে নিয়ে স্ত্রী চন্দনা রানী প্রতিমাকে (৩২) আদালতে হাজিরের জন্য সমন জারির আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দুপুরে গাইবান্ধার আমলি (সুন্দরগঞ্জ) মো. জান্নাতুল ইসলামের আদালতে মামলাটি করেছেন রবিন্দ্রনাথ কর্মকার। তিনি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামের মৃত যোগেশ চন্দ্র কর্মকারের ছেলে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবেদুর রহমান সবুজ জানান, যৌতুক লোভী ও নির্যাতনকারী স্ত্রীসহ তিন জনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের যৌতুক নিরোধ আইনের ৩ ধারায় অভিযোগ এনে আদালতে মামলার জন্য আবেদন করা হয়। শুনানিতে আদালত সন্তুষ্ট হয়ে মামলাটি গ্রহণ করে ১নং আসামি স্ত্রী চন্দনা রানী প্রতিমাকে সমন পাঠানোর আদেশ দেন।
অপর দুই আসামি হলেন- বাদীর শাশুড়ি উর্মিলা রানী (৫৫) ও ভায়রা ভাই দীপু চন্দ্র কণ্ঠক (৩৫)।
মামলার নথির বরাত দিয়ে আইনজীবী আবেদুর রহমান সবুজ বলেন, ১৮ বছর আগে সনাতন ধর্মের রীতি অনুযায়ী বামনজল গ্রামের সুরেশ চন্দ্রের মেয়ে চন্দনা রানী প্রতিমার সঙ্গে রবিন্দ্রনাথ কর্মকারের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে পায়েল কর্মকার (১৫) ও মুসকান (৭) নামে দুই মেয়ে সন্তান আছে। বিয়ের পর থেকে চন্দনা রানী তার মা ও বোন জামাই মিলে নগদ ৩০ লাখ টাকা অথবা বসত ভিটার ৩৫ শতাংশ জমি লিখে দেওয়ার দাবিতে রবিন্দ্রনাথকে নির্যাতন করে আসছেন। সংসার ও সন্তানদের কথা চিন্তা করে ভুক্তভোগী ২০১৮ সালের ২৪ জুলাই কবলা দলিলমূলে সাড়ে ১৩ শতক জমি স্ত্রীর নামে কিনে দেন।
তিনি আরও জানান, কিছু দিন ভালোভাবে সংসার চললেও আবারও বসত ভিটার জায়গা অথবা ৩০ লাখ টাকা না দিলে চন্দনা রানী সংসার করবে না মর্মে বিভিন্ন হুমকিসহ রবিন্দ্রনাথকে নির্যাতন করতে থাকেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ মে বোন জামাই দীপু চন্দ্র কণ্ঠকের সহযোগিতায় শোকেস খুলে নগদ ২৫ লাখ টাকা, ২২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও এক লাখ টাকা মূল্যের জিনিসপত্রসহ দুই মেয়েকে নিয়ে বাড়ি থেকে চলে যান স্ত্রী। পরে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়নি। ফলে অতিষ্ঠ হয়ে রবিন্দ্রনাথ আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন।
মামলার বাদী রবিন্দ্রনাথ কর্মকার অভিযোগ করে বলেন, বসত ভিটা লিখে দেওয়া অথবা নগদ ৩০ লাখ টাকার দাবিতে প্রায়ই স্ত্রী গালাগালি করে সংসার করবে না বলে হুমকি দিতো। সংসার ও দুই মেয়ে সন্তানের কথা ভেবে সাড়ে ১৩ শতক জমি কিনে স্ত্রীর নামে দলিল করে দেই। কিন্তু তারপরেও সংসার করবে না- আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে জেল খাটাবে বলে হুমকি দেয়। আমাদের দুটি মেয়ে সন্তান আছে। মানসম্মানের ভয়ে এতদিন চুপ ছিলাম। তার অত্যাচার, শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করি, ন্যায়বিচার পাবো।