আদালতের আদেশ অমান্য করায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহণকারী ও আদালতে বিচারাধীন মামলার বাদীর চিকিৎসা সনদপত্র প্রদান করার নির্দেশ অমান্য করায় রমেক পরিচালকের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
কুড়িগ্রাম চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (উলিপুর আমলি) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মজনু মিয়া স্বাক্ষরিত তলব আদেশ বুধবার (৬ নভেম্বর) রমেক পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখা সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালে মারামারির ঘটনায় আহত হয়ে উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুবীর জারারপাড় গ্রামের সফজল হোসেন রংপুর মেডিক্যালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করেন। এ ঘটনায় তিনি মামলা করেন। একপর্যায়ে মামলার অধিকতর তদন্তভার পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) দেওয়া হয়। সিআইডির তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) বাদীর চিকিৎসা সনদপত্র চেয়ে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বরাবর একাধিকবার যোগাযোগ করেও প্রতিবেদন পাননি। পরে তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
আইওর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১২ আগস্ট রমেক পরিচালককে আদেশপ্রাপ্তির ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে ওই চিকিৎসা সনদপত্র সরবরাহের আদেশ দেন আদালত। কিন্তু পরিচালক গত আড়াই মাসেও সেই সনদপত্র সরবরাহ করেননি। এতে উষ্মা প্রকাশ করেন আদালত।
ব্যাখ্যা তলবের আদেশে আদালত বলেছেন, ‘আদেশ অমান্য করে সে অনুযায়ী ভিকটিমের চিকিৎসা সনদপত্র কিংবা উক্ত বিষয়ে কোনও প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি। এতে মামলাটির তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে। এমতাবস্থায় আদালতের আদেশ অমান্য করায় কেন আপনার (রামেক পরিচালক) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সুপারিশ করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যাসহ ভিকটিমের সনদপত্র আদালতে অথবা তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
কুড়িগ্রাম সিআইডির উপপরিদর্শক ও মামলার আইও ছকিদুল ইসলাম বলেন, ‘চিকিৎসা সনদপত্র পেতে রমেক হাসপাতালে বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। বারবার আবেদন করেও সনদপত্র পাওয়া যাচ্ছে না। আদালতের আদেশ যথাসময়ে পৌঁছে দিয়ে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করেও কোনও লাভ হয়নি। এতে করে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বিলম্ব হচ্ছে। পরে বিষয়টি আবারও আদালতকে অবহিত করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আবারও আদেশ দিয়েছেন।’