আবারও বিপদসীমার ওপরে তিস্তার পানি, ভাঙনে দিশাহারা মানুষ

চার দিন ধরে অনাবৃষ্টি। তীব্র রোধে অনেকটা তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি চলছে। জেলার সব নদ-নদীর পানি কমে গিয়ে নিম্নাঞ্চলের মানুষের মনে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু এরই মধ্যে সেই স্বস্তি ফিকে হতে বসেছে। মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাত থেকে অব্যাহত বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমা অতিক্রম করেছে তিস্তার পানি। বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সন্ধ্যা ৬টায় এই নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় তিন্তার পানি ২৭ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেলেও বৃহস্পতিবার দিনভর বৃদ্ধির মাত্রা কম ছিল। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় তিস্তার পানি কাউনিয়া পয়েন্টে পাঁচ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। একই সময়ে দুধকুমার ও ধরলা নদীর পানি প্রবাহ হ্রাস পেয়েছে। ব্রহ্মপুত্র অনেকটা স্থিতিশীল ছিল।

বৃহস্পতিবার দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যার পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, দেশের উত্তরাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন উজানে আগামী ২৪ ঘণ্টায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর পানি সময় বিশেষে বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বন্যা সংক্রান্ত কোনও পূর্বাভাস দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।

এদিকে, কুড়িগ্রামের রাজারহাটের বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙনে বসতি হারিয়ে দিশাহারা হয়ে পড়েছে বেশ কয়েকটি দিনমজুর পরিবার। বিকল্প কোনও জমি না থাকায় তারা অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়ন এবং ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নে ধরলা ভাঙনে লোকালয় সংকুচিত হয়ে আসছে। বিলীন হচ্ছে বসতি ও আবাদি জমি। ভাঙন চলছে ব্রহ্মপুত্রেও। তবে চরাঞ্চল হওয়ায় ‘নির্দেশনা নেই’ অজুহাতে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে অপারগতা জানিয়েছে পাউবো।

পাউবোর কুড়িগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘তিস্তায় পানি বাড়ার পূর্বাভাস থাকলেও বন্যা সংক্রান্ত কোনও সতর্কতা পাওয়া যায়নি। চরাঞ্চলে ভাঙন রোধে নির্দেশনা নেই। বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে তিস্তার ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেখানে কাজ চলমান।’