‘দেশের সার্বভৌমত্বের ওপর আঘাত আসছে আর সরকার বলছে, আমরা দেখছি। এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে এই মেসেজ দেওয়ার জন্য তাদের কোনও স্টেটমেন্ট পর্যন্ত নেই।’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মিয়ানমার ইস্যুতে ‘অনির্বাচিত, অবৈধ, দখলদারি ও দুর্বল’ সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করে অবিলম্বে তাদের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
রবিবার (১৬ জুন) দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ের তাঁতিপাড়ার নিজ বাসভবনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এ সরকারের জনগণের কোনও ম্যান্ডেট নেই। বিদেশি সাহায্যের ওপরেই তারা টিকে আছেন। তাই তাদের পক্ষে সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে সোচ্চার ভূমিকা আশা করা যায় না।’
এবারের আসন্ন ঈদুল আজহা প্রশ্নে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোরবানির পশুর হাটে মানুষের ভিড় নেই। দ্রব্যমূল্য মানুষের নাগালের বাইরে। কারণ, এই সরকার দেশের সম্পদ লুট করে বাইরে পাচার করে দিয়েছে। ব্যাংক ও দেশের রিজার্ভ প্রায় শূন্য তাই সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা একদম কমে গেছে। এটা কেবল বিএনপি বলছে না, দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদরাও এমন কথা বলে যাচ্ছেন।’
বেনজীর-আজিজকে ‘বলির পাঁঠা’ বানানো হয়েছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘দুঃশাসনের এ সরকার আমলাদের ব্যবহার করে নিজেরা ফায়দা নিয়ে এখন সব দোষ তাদের ঘাড়ে চাপিয়ে নিজেরা বাঁচতে চেষ্টা করছে। এখন আবার সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়ার দুর্নীতির খবর শিরোনামে আসছে। একে একে থলের বিড়াল বেড়িয়ে আসছে।’ সরকারের ‘তল্পিবাহক’ আমলাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অবৈধ অনিয়মতান্ত্রিক সরকারের পক্ষ নিয়ে অপকর্মে লিপ্ত হলে বেশি দিন টিকে থাকা যায় না।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাম্প্রতিক রদবদল ও কমিটিতে নতুন নেতৃত্বের আগমন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একটা দলে রদবদল ও শূন্যস্থান পূরণ দলকে আরও শক্তিশালী করে। বিএনপিও আরও শক্তিশালী হয়েছে এবং এ প্রশ্নে দলে কোনও অসন্তোষ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলন কখনও ব্যর্থ হয় না। বিএনপির আন্দোলনও ব্যর্থ হয়নি। আন্দোলন ব্যর্থ হলে এ দেশে স্বাধীনতা আসতো না, ভাষা আন্দোলন হতো না। বিএনপির আন্দোলন সরকারের দমননীতির কারণে সাময়িক স্তিমিত হলেও তা আবারও বেগবান হচ্ছে। আন্দোলন এগিয়ে যাবে, বিএনপি কখনোই মাঠ থেকে সরে যায়নি।’ ভারতসহ পৃথিবীর অগণতান্ত্রিক দেশগুলো নির্বাচনের নামে প্রহসন করে বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন করে যাচ্ছে, বাংলাদেশেও সেটাই হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় মির্জা ফয়সাল আমীন, শরিফুল ইসলাম, পয়গাম আলীসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।