আর্থিক সংকটে পড়েছেন নীলফামারীর পাল পাড়ার মৃৎশিল্পীরা। করোনার কারণে বাংলা নববর্ষ ও চৈত্র সংক্রান্তির (চরক পূজা) মেলাও হয়নি। ফলে মৃৎ শিল্পীদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এ সম্প্রদায়ের লোকজন বেঁচে থাকে বাংলা নববর্ষকে ঘিরে। করোনার কারণে এ বছর পহেলা বৈশাথের মেলা হয়নি। আবার আগে থেকে বায়না দিয়ে রাখা ব্যবসায়ীরাও শেষ মুহূর্তে অর্ডার বাতিল করেছেন। ফলে জিনিসপত্র নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কুমাররা।
জেলা সদরের সোনারায় ইউনিয়নের উত্তর মুসরত কুখাপাড়া গ্রামের ক্লিক চন্দ্র পাল বলেন, করোনার জন্য সব ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ রয়েছে। অনাহারে অর্ধাহারে চলছে তাদের জীবন। ভালো নেই তারা।
ওই ইউনিয়নের কুখাপাড়া গ্রামের শঙ্কর চন্দ্র পাল বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতে হাট বাজার বন্ধ থাকায় কর্মহীন হয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন চলছে। বৈশাখের রোজগার করা টাকা দিয়ে বছরের বাকি ১১ মাস সংসার চলে। করোনার কারণে চরম সমস্যায় পড়েছি আমরা।’
তিনি বলেন, এবার মৃৎশিল্পের ব্যবসার চিত্র ভিন্ন। মাটির তৈরি হাজার হাজার তৈজসপত্র রয়েছে মৃৎশিল্পীদের কারখানায়। এই সম্প্রদায়ের মানুষের রুজি রোজগার প্রায় বন্ধের পথে।
সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের চওড়া পালপাড়া গ্রামের করুনা কান্ত পাল জানান, মাটি কিনে এনে তৈজসপত্র বানাতে হয়। মাটি কিনে হাঁড়ি-পাতিল, বানানো হলেও তা বিক্রি হয়নি। ফলে কয়েক লাখ টাকার ক্ষতি হয়ে গেলো। এ অবস্থায় এখানকার প্রায় দুইশত পরিবার চরম বিপাকে পড়েছে। সরকারি প্রণোদনার দাবি জানান তিনি।
নীলফামারী সমাজ সেবা অধিদফতরের উপপরিচালক হাসিম রেজা জানান, কামার, কুমার, জেলে ও তাঁতি এরা সমাজের একটি অংশ। অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা ব্যাপক অবদান রাখে। সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতার অনেক সুযোগ আছে। তবে এককভাবে কাউকে সহযোগিতার সুযোগ নেই। সংগঠিত হয়ে সমিতির মাধ্যমে আসতে হবে। তাহলে তাদের জন্য আর্থিক সুবিধা দেওয়া যেতে পারে।