সৈয়দ হকের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে জেলা প্রশাসন, জেলা আইনজীবী সমিতি ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কবির সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে। পরে একটি র্যালি বের হয়ে জেলা প্রশাসন চত্বরে শেষ হয়। সেখানে নবনির্মিত ‘স্বপ্ন কুঁড়ি’ নামক হল রুমে কবির জীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলা সাহিত্যের সব শাখায় সমানভাবে পদচারণার জন্য সৈয়দ শামসুল হককে ‘সব্যসাচী লেখক’ বলা হয়। ১৯৬৪ সালে মাত্র ২৯ বছর বয়সে তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পেয়েছিলেন। এ পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে কম বয়সে এটি লাভ করেন। এছাড়াও তিনি একুশে পদক ও স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন।
১৯৫০-এর দশকে প্রকাশিত হয় তার প্রথম উপন্যাস ‘দেয়ালের দেশ’। সে ধারাবাহিকতায় প্রকাশিত তার অন্যান্য উপন্যাসগুলো হলো– খেলারাম খেলে যা, নিষিদ্ধ লোবান, সীমানা ছাড়িয়ে, নীল দংশন, বারো দিনের জীবন, তুমি সেই তরবারি, কয়েকটি মানুষের সোনালি যৌবন ও নির্বাসিতা।
তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থগুলোর মধ্যে রয়েছে– একদা এক রাজ্যে, বৈশাখে রচিত পঙক্তিমালা, পরানের গহীন ভিতর, অপর পুরুষ, অগ্নি ও জলের কবিতা।পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায় ও নুরুলদীনের সারাজীবন সৈয়দ শামসুল হকের বিখ্যাত কাব্যনাট্য।
মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত তিনি বেশ কিছু সিনেমার চিত্রনাট্য লিখে সুনাম কুড়িয়েছেন। যেমন– মাটির পাহাড়, তোমার আমার, কাচ কাটা হীরে, বড় ভালো লোক ছিল ইত্যাদি। তিনি শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন।
১৯৭১ সালের নভেম্বরে তিনি লন্ডন চলে যান। সেখানে বিবিসি বাংলার সংবাদ পাঠক হিসেবে চাকরি করেন। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণের খবর বিবিসি থেকে তিনিই পাঠ করেছিলেন।
কবির স্মৃতিকে সংরক্ষণের দাবি জানিয়ে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক শ্যামল ভৌমিক বলেন, ‘গুনি এ লেখক তার সাহিত্যকর্মের মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবেন মানুষের মাঝে। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তার স্মৃতি ধরে রাখা প্রয়োজন। আমরা চাই, কবির সমাধি ঘিরে একটি স্মৃতি কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হোক। এতে করে বহুমাত্রিক এ লেখকের সাহিত্যচিন্তা এ জেলার শিক্ষার্থীসহ দেশের সব সাহিত্য অনুরাগীদের সমৃদ্ধ করবে।’