হত্যা ও মুখ ঝলসে দেওয়ার আগে শিশুটিকে ধর্ষণ করেছিল পাঁচ জন: পুলিশ

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার সাত বছরের সেই শিশুটিকে হত্যার আগে ধর্ষণ করেছিল পাঁচ জন। নববর্ষের দিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটেছিল। এ ঘটনায় গ্রেফতার চার কিশোর ও এক তরুণ জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্য জানিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ।

গত ১৪ এপ্রিল বিকালে বড়াইগ্রাম উপজেলার বাড়ি থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় শিশুটি। সারারাত খোঁজার পরও সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরদিন বাড়ি থেকে ৩০০ গজ দূরে পার্শ্ববর্তী জেলা পাবনার চাটমোহরের ভুট্টাক্ষেত থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় তার মুখ ঝলসানো ছিল। খবর পেয়ে স্বজনরা সেখানে গিয়ে লাশ শনাক্ত করেন। এ ঘটনায় চাটমোহর থানায় বাদী হয়ে মামলা করেন শিশুটির মা।

চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘মামলার পর পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এর মধ্যে চার জনকে যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে (বালক) পাঠানো হবে।’

পাবনা জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বড়াইগ্রাম থেকে নিখোঁজের একদিন পর শিশুটির লাশ সীমান্তবর্তী উপজেলা চাটমোহরের ভুট্টাক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়। লাশটির মুখ ঝলসানো ছিল। এরপর নাটোর ও পাবনা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে। চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলমের নেতৃত্বে কাজ শুরু হয়। চাটমোহর, নাটোরের বড়াইগ্রাম ও ডিবি পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে প্রথমে এক কিশোরকে গ্রেফতার করে। তার দেওয়া তথ্যে অন্যদের গ্রেফতার করা হয়।

এই পাঁচ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঘটনার দিন বাংলা নববর্ষ ছিল। এ উপলক্ষে অভিযুক্তরা গাঁজা সেবন ও আনন্দ-ফুর্তি করার প্রস্তুতি নেয়। তারা টাকা তুলে গাঁজা কেনে। ওই দিন বিকালে ভুক্তভোগী শিশুটি গ্রামের একটি আমবাগানে আম কুড়াতে যায়। তাকে কিশোরদের চোখে পড়ে। তারা আমবাগান থেকে তুলে নিয়ে একটি কলাবাগানে যায়। সেখানে চার কিশোর ধর্ষণ করে। অবস্থার অবনতি হলে কলাবাগান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভুট্টাক্ষেতে আনা হয়। সেখানে এক তরুণ ধর্ষণ শেষে গলা টিপে হত্যা করে ও মুখে দাহ্য পদার্থ ছিটিয়ে দেয়। এরপর সবাই পালিয়ে যায়।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, শিশুটির লাশ যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেটি চাটমোহর উপজেলার মধ্যে। এলাকাটি চাটমোহর ও বড়াইগ্রামের সীমান্তবর্তী। ওই দিন বিকালে শিশুটিকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল গ্রেফতারকৃত পাঁচ আসামি। পরে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে পালিয়ে যায়।