নওগাঁয় দিনদুপুরে বাসায় ঢুকে আলিউজ্জামান পিও (২২) নামের এক তরুণকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের প্রতি অভিযোগ তুলেছে আহতের পরিবার।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে শহরের কেডির মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আলিউজ্জামান রাজশাহী বঙ্গবন্ধু কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
আলিউজ্জামানের বাবা আতিকুর রহমান করেন, ‘আলিউজ্জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সংগঠক ছিলেন। এ কারণে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের কর্মীরা তার ছেলেকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।’ হুমকিদাতারাই এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জানা গেছে, আতিকুর রহমান পরিবার নিয়ে শহরের কেডির মোড় এলাকায় চারতলা ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে থাকেন। আলিউজ্জামান আজ দুপুরে বাড়িতে একাই ছিলেন। দুপুর ১টার দিকে ২৫-৩০ তরুণ ঘরে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপাতে থাকে। এ সময় তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমার ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সংগঠক ছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকায় ছাত্রলীগের কর্মীরা তাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। ছাত্রলীগের কর্মীরাই বাসায় ঢুকে কুপিয়ে জখম করে গেছে বলে ধারণা করছি।’ এ ঘটনায় তিনি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘দুপুর ১টার দিকে ২৫-৩০ জন তরুণ জোর করে বাসার ভেতর ঢুকে পড়ে। তাদের সবার বয়স ১৭ থেকে ২০ বছরের মধ্যে। তিনতলায় আতিক সাহেবের বাসায় ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। আশপাশের লোকজন আসার আগেই তারা পালিয়ে যায়।’
নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আবু জার গাফফার জানান, আহতের মাথা, পাঁজর ও বুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানোর আঘাত রয়েছে। জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, নওগাঁয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনও কমিটি নেই বলে জানা গেছে। জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে পরিচিত ফজলে রাব্বী জানান, আলিউজ্জামান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন কি-না, সেটি তিনি নিশ্চিত নন।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।