রাজশাহীতে নিখোঁজের ১৫ দিন পর মোহাম্মদ রিজওয়ান ইসলাম (১৫) নামে এক স্কুলছাত্রের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে কাশিয়াডাঙ্গা থানার তালপুকুর একটি বদ্ধঘর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
রিজওয়ানের লাশ উদ্ধারের পরে স্থানীয় লোকজন এ ঘটনায় অভিযুক্ত পাপ্পুর বাড়িতে আগুন দেয়। এতে পাপ্পুর বাড়ি পুড়ে যায়। নিহত রিজওয়ান কাশিয়াডাঙ্গা তালপুকুর এলাকায় বাসিন্দা। পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি বাবার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালাতো।
পুলিশ জানায়, গত ২৩ মার্চ ঠাকুরমারা এলাকা থেকে পূর্বপরিচিত পাপ্পুসহ পাঁচ জন অটোরিকশা নিয়ে গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাটে যান। এরপর থেকে রিজওয়ানের খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন পরিবারের পক্ষ থেকে দামকুড়া থানায় পাপ্পুকে প্রধান করে আরও পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।
এর মধ্যে পাপ্পু, পিয়াস, মানিক, রাসেল ও রিপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সোমবার (৭ এপ্রিল) আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। রিমান্ডে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, অটোরিকশা ও ব্যাটারির জন্য হত্যা করা হয় রিজওয়ানকে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রধান আসামির রিমান্ডে দেওয়া তথ্যমতে মঙ্গলবার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
খোঁজ পেয়ে নিহতের পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসেন ঘটনাস্থলে। তারা রিজওয়ানের লাশ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ সময় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী আসামিদের কঠোর শাস্তির দাবি করেন।
এদিকে, নগরীর লিলি হলের মোড় এলাকার পাপ্পুর বাড়িতে আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এতে পাপ্পুর বাড়ি পুড়ে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
রাজশাহী উত্তর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা রাহিত হাসান বলেন, মঙ্গলবার রাত ৮টা ১৮ মিনিটে কাশিয়াডাঙ্গা থানা থেকে পুলিশ আগুনের খবর দেয়। গাড়ি ঘটনাস্থলে গিয়েছে। এখনও ফিরে আসেনি।
দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘রিজওয়ানকে কোমল পানির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাইয়ে দেওয়া হয়। এরপর অচেতন অবস্থায় নির্মাণাধীন ঘরে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হয়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’