গ্রেফতারের ১৩ দিন পর হাসপাতালে আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু

বগুড়া জেলা কারাগারে এমদাদুল হক ভুট্টু (৫১) নামে আরও এক আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ফজরের নামাজের পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। তিনি একটি মামলায় তদন্তে পাওয়া আসামি।

এ নিয়ে গত ৫ আগস্টের পর বগুড়া কারাগারে গ্রেফতার পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু হলো। জেলার সৈয়দ শাহ শরীফ এ তথ্য দিয়েছেন।

বগুড়ার গাবতলী থানার ওসি আশিক ইকবাল জানান, এমদাদুল হক ভুট্টু গাবতলী উপজেলার দক্ষিণপাড়া ইউনিয়নের লাংলু গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি গাবতলী উপজেলার দক্ষিণপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

বগুড়া জেলা মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক ও গাবতলী শাখার সভাপতি সুরাইয়া জেরিন রনি গত ৩০ সেপ্টেম্বর গাবতলী থানায় তার বাড়ি ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। এ মামলায় এমদাদুল হক ভুট্টু তদন্তে পাওয়া আসামি হিসেবে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতার হন।

বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার সৈয়দ শাহ শরীফ জানান, এমদাদুল হক ভুট্টু গাবতলী থানার একটি বিস্ফোরক ও ভাঙচুরের মামলায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারের পর জেলে আসেন। সেদিন তিনি উচ্চ রক্তচাপ সংক্রান্ত জটিলতায় ছিলেন। তাকে কারাগারের হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়। হাজতি ভুট্টুকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। মঙ্গলবার সেহরি ও ফজর নামাজের পর তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে পাঠানো হলে সকাল ৭টা ১০ মিনিটে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।

এর আগে, গত বছরের ১১ নভেম্বর থেকে ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা কারাগার ও হাসপাতালে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের চার নেতার মৃত্যু হয়।

এরা হলেন- বগুড়া পৌরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম রতন (গত বছরের ১১ নভেম্বর), শিবগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুল লতিফ (গত বছরের ২৫ নভেম্বর), জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহাদত আলম ঝুনু (গত বছরের ২৬ নভেম্বর) এবং গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, দুর্গাহাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ও দুর্গাহাটা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মতিন মিঠু (গত বছরের ৯ ডিসেম্বর)।

এদিকে বগুড়া জেলা কারাগারে এক মাসে চার আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যরা কারাগার কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেন। এর প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তবে এ কমিটির কার্যক্রম নেই বললেই চলে। এর অগ্রগতি সম্পর্কে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

বগুড়া জেলা কারাগারের জেলার সৈয়দ শাহ শরীফ জানান, এর আগে চার নেতার মৃত্যুতে গঠিত তদন্ত কমিটির কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সিভিল সার্জন বদলি হওয়ায় এ কার্যক্রম কিছুটা থমকে গেছে।

তিনি আরও জানান, কারাগারে সর্বশেষ এমদাদুল হক ভুট্টুসহ পাঁচ আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যুতে তাদের কোনও অবহেলা নেই। তারা (আওয়ামী লীগ নেতা) বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। মঙ্গলবার দুপুরে সুরতহাল, ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে ভুট্টুর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।