জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার আমুনিয়া গ্রামে গরুর বাছুরকে মারধরের প্রতিবাদ করায় ফিরোজ হোসেনকে (১৮ তৎকালীন বয়স) পিটিয়ে হত্যা মামলায় বাবা-ছেলেসহ ১৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও দুই বছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।
রবিবার (২০ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় জয়পুরহাট অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক নুরুল ইসলাম এ রায় দেন। এ সময় তিন আসামি অনুপস্থিত ও ১০ জন আদালতে উপস্থিতি ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জয়পুরহাট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এপিপি খাজা শামসুল বুলবুল।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ক্ষেতলালের আমুনিয়া গ্রামের মৃত আশরাফ আলী মন্ডলের ছেলে আজিজার রহমান (৪৩), সাহেব আলীর ছেলে সাহাদুল ইসলাম (৩৯), সাইদুল ইসলাম (৩৬), মৃত শুকুর আলীর ছেলে মোজাম (৬১), মোসলেম (৫৫), মোসলেমের ছেলে আমিনুর (৩৩), আশমত উল্লাহ (৬১), তার ছেলে আবুল কাশেম (৩৭), মৃত সোলাইমানের ছেলে সেকেন্দার (৩৬), তার ছেলে শাহীন মোল্লা (৩৩), ইয়াকুব আলীর ছেলে আকরাম আলী (৪৬), আশরাফ আলীর স্ত্রী জিন্নাহ (৫৩) ও মৃত মেহের আলীর ছেলে আব্দুস সাত্তার (৫১)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৯ জুন বিকাল ৫টায় মনসুর আলী ফকিরের একটি গরুর বাছুরকে মারধর করে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই দিন রাত ৮টার দিকে প্রতিবেশী ছয়ের আলী তালুকদারের খলিয়ানে গ্রাম্য সালিশ বসে। সালিশের মধ্যে একই গ্রামের মোজাম, মোসলেম, আমিনুর, আবুল কাশেম, আশমত, সেকেন্দার, শাহিন মোল্লা, আকরাম, জিন্নাহ ও সাত্তার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মনসুরের ছেলে ফিরোজের ওপর একযোগে হামলা করেন। হামলায় গুরুতর আহত হন তিনি।
আহত ফিরোজকে উদ্ধার করে প্রথমে ক্ষেতলাল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মুনসুর আলী ফকির বাদী হয়ে ১৩ জুন ক্ষেতলাল থানায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। পরে মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রফিকুল ইসলাম ২০১৩ সালের ২৬ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্য ও শুনানি শেষে রবিবার দুপুরে আদালতের বিচারক ১৩ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের এ রায় ঘোষণা করেন।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি খাজা শামসুল ইসলাম বুলবুল। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান।