চিঠি দিয়ে চাঁদা দাবি

বছরের বেশির ভাগ সময় জেলে থাকি, বাইরে থাকলে গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করি

নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় সর্বহারা সংগঠনের নামে ৫ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে তিন জনের বাড়িতে চিঠি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ওই চিঠি পাওয়ার পর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে সংশ্লিষ্ট পরিবারসহ স্থানীয়দের মাঝে। পুলিশের ধারণা, স্থানীয় মাদকসেবীরা এই ঘটনা ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

বুধবার (৯ অক্টোবর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করে গুরুদাসপুর পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় একজন সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।

জিডির দেওয়া তথ্যমতে, গত মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকালে বাড়ির গেটের পাশে খামভর্তি চিঠি পান গুরুদাসপুরের রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজসংলগ্ন এলাকার তিন বাসিন্দা স্থানীয় নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক উত্তম কুমার কুণ্ডু, মকিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল সরকার ও ব্যবসায়ী সোহেল আনোয়ার।

চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘আশা করি মহান আল্লাহর রহমতে ভালোই আছেন। দোতলা বাড়ি, ছেলে, বউ—সব মিলিয়ে ভালো। আমরা ভালো নাই। বছরের বেশির ভাগ সময় জেলে থাকি। আর যে বাকি সময় বাইরে থাকি, সেটুকু সময় গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করি। আপনাকে পাঁচ দিন সময় দেওয়া হলো। এই পাঁচ দিনের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে রাখবেন। তা ছাড়া আপনার ছেলেকে জবাই করে মাথা পাঠিয়ে দেবো আপনার বাসায়।’

চিঠিতে আরও লেখা হয়, ‘পুলিশ কিংবা আইনের যেকোনও বাহিনী এক বছরের মধ্যে আমাদের ধরতে পারবে না। তত দিনে আপনার ছেলের গলাকাটা জবাই করা লাশ হাড় হয়ে যাবে। টাকা কোথায়, কীভাবে দেবেন, আমরা জানিয়ে দেবো।’

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাজিরপুর ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক উত্তম কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির গেট দিয়ে বের হওয়ার সময় একটি খাম দেখতে পাই। সেই খাম খুলে দেখি একটি চিঠি।’

তিনি আরও জানান, বিষয়টি তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। চিঠি পাওয়ার পর থেকে তিনি সপরিবারে আতঙ্কে আছেন।

ব্যবসায়ী সোহেল আনোয়ার জানান, হুমকির চিঠি পাওয়ার পরপরই থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তিনি নিজ পরিবারের নিরাপত্তাসহ যারা চিঠি পাঠিয়েছেন তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

মকিমপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাবুল সরকার জানান, এ ঘটনায় তিনি ও তার পরিবার আতঙ্কিত।

এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, ‘সর্বহারা কোথাও নেই। হয়তো কোনও মাদকসেবী এই কাজ করেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আশা করছি, অতি দ্রুততম সময়ে ওই চিঠিদাতাদের আইনের আওতায় আনা হবে।’