যারা আইন প্রয়োগ করার কথা, তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে: ড. দেবপ্রিয়

বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সভাপতি ও সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘রাষ্ট্রের প্রতিটি অঙ্গই কোনও না কোনোভাবে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইন প্রণয়ন করার কথা তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে। যাদের আইনের সুরক্ষা দেওয়ার কথা, তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে। যারা আইনকে প্রয়োগ করার কথা, তারা দুর্নীতিতে যুক্ত হয়ে গেছে। দুর্নীতি আমরা যদি দূর করতে না পারি, তাহলে অনেক সম্ভাবনাই কার্যকরী হবে না।’

বুধবার (৯ অক্টোবর) রাজশাহীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত বাংলাদেশের বিদ্যমান অর্থনৈতিক অবস্থার শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির জনশুনানিতে তিনি এ কথা বলেন। রাজশাহী নগরীর একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ সময় রাজশাহীর স্থানীয় অর্থনৈতিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সার্বিক অবস্থার নানা অভিযোগ ও পরামর্শ শোনেন কমিটি।

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য  বলেন, ‘এতদিন দেশের ভেতরে যারা দুর্নীতি করেছেন তাদের শাস্তি দিতে হবে। যদি তাদের দৃশ্যমান শাস্তি না হয়, তাহলে আগামী দিনে দুর্নীতি বন্ধ করার যে নীতিগতভাবে নজরদারির কথা বলছি, সেটা সম্ভব হবে না। দুর্নীতি আমাদের এক নম্বর শত্রু।’

তিনি বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বিগত সময়ে সচিবরা কীভাবে ব্যবসায়ী হয়ে গেলেন এবং ব্যবসায়ীরা কেমন করে রাজনীতিবিদ হয়ে গেলেন। অনেকে মনে করেন, কেবল ব্যবসায়ীরাই রাজনীতিবিদ হননি, রাজনীতিবিদরাও ব্যবসায়ী হয়ে গেছেন।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন- শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ কে এনামুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. সেলিম রায়হান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শরমিন্দ নীলোর্মি ও সিপিডির সিনিয়র ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

জনশুনানিতে নাগরিকরা তুলে ধরেন রাজশাহী নগরীসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, প্রকল্পে দুর্নীতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশাসনে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নসহ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তুলে ধরেন উন্নয়নে আঞ্চলিক বৈষম্য ও বেকারত্বের কথাও।