বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের ওপর ককটেল হামলা হয়েছে। এতে কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের চার শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বগুড়া সদর থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) রহিম উদ্দিন এ তথ্য জানিয়েছেন।
আহতরা হলেন বগুড়ার ধুনট উপজেলার বথুয়াবাড়ির বাদশার ছেলে সুমন রানা (২৩), একই উপজেলার বেলকুচি গ্রামের গোলাম রব্বানীর ছেলে মামুন (২২), আনারপুর গ্রামের বেলালের ছেলে তাফসির (২০) ও চালাপাড়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মিলন (২০)। তারা প্রত্যেকেই কলেজের অর্থনীতি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
প্রত্যক্ষদর্শী সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে নতুন ভবনের সামনে সাতমাথা-তিনমাথা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় তারা কোটাবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। অবরোধের সময় গুরুত্বপূর্ণ ওই সড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশ প্রশাসনের অনুরোধে কোটাবিরোধীরা ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়েন। এ সময় প্রশাসন ভবনের কিছুটা সামনে হঠাৎ বিকট শব্দে ককটেল বিস্ফোরণ হয়। এতে কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুমন রানা, মামুন, তাফসির ও মিলন রক্তাক্ত জখম হন।
শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করেন। ককটেল হামলার পর শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। এ ঘটনার পরপরই কলেজে ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মিছিল শেষে অবস্থান করতে দেখা যায়। তবে কে বা কারা হামলা করেছে সে ব্যাপারে আহতরা ও পুলিশ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি।
আহতদের মধ্যে তাফসির বলেন, ‘কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা কলেজের সামনে তিনমাথা-সাতমাথা সড়ক অবরোধ করি। প্রায় আধা ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন শেষে ক্যাম্পাসে ফিরছিলাম। এ সময় হঠাৎ ককটেল বিস্ফোরণে আমিসহ কয়েকজন আহত হয়েছি।’ তবে কারা হামলা চালিয়েছে সে ব্যাপারে তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। তার ধারণা, যারা কোটার পক্ষে তারাই এ হামলা চালিয়েছে।
বগুড়া সদর থানার সেকেন্ড অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) রহিম উদ্দিন জানান, আহতরা সবাই কোটাবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত। কে ককটেল হামলা চালিয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বগুড়ার ছিলিমপুর মেডিক্যাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মিলাদুন্নবী জানান, ককটেল হামলায় আহত চার জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর খোন্দকার কামাল হাসান জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করেন। এরপর প্রশাসন ভবনের সামনে সিটে বসে থাকা ছাত্রদের ওপর কে বা কারা ককটেল হামলা চালায়। এতে চার ছাত্র আহত হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, এ সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার চেম্বারের সামনে ছিল। কারা ককটেল হামলা চালিয়েছে সে ব্যাপারে অধ্যক্ষ কিছু মন্তব্য করতে পারেননি। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তথ্য সংগ্রহ করেছে। তারা হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।’