কোটা আন্দোলনে অপরাজনীতি ঢুকেছে, সমাধান আদালতে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘কোটা নিয়ে আন্দোলনকারীদের ছাত্রদল যখন সমর্থন দেয়, তখনই দেশের জনগণ বুঝতে পেরেছে এর ভেতরে অপরাজনীতি ঢুকে গেছে। তবে বাংলাদেশে কোনও অপরাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। রাজনৈতিক বিরোধী শক্তি শেখ হাসিনাকে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। এজন্য তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। নিজেদের আন্দোলন করার ক্ষমতা নেই। তাই কোটা আন্দোলনে ঢুকেছে। দেশের মানুষ তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেবে। আওয়ামী লীগ সবসময় জনগণের সঙ্গে ছিল এবং আছে। তাদের সঙ্গে নিয়েই সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করবো আমরা।’ 

তিনি বলেন, ‘সরকার শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে কোটা বাতিল করেছিল, আদালত সেটি পুনর্বহাল করেছেন। কাজেই কোটার সমাধান আদালতের মাধ্যমেই হবে। বিষয়টি যারা বোঝেন না বা বুঝেও বুঝতে চান না, বা যাদের বিএনপিসহ অন্যরা ইন্ধন দিচ্ছে, তাদের বলবো শিক্ষার্থীদের বিভ্রান্ত করবেন না।’

শনিবার (১৩ জুলাই) বিকালে বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন, জেলা আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতৃবৃন্দকে সংবর্ধনা এবং মরণোত্তর সম্মাননা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি সংস্কার নিয়ে শিক্ষার্থীদের দাবির প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কোটা সরকার পুনর্বহাল করেনি। সরকার বরং শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালে বাতিল করেছিল। বাতিলের পর কোটাহীনভাবে সরকারি ও অন্যান্য চাকরিতে নিয়োগ হচ্ছিল। হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন কোটা পুনর্বহালের জন্য। সুপ্রিম কোর্ট সেটি স্থগিত করেছেন। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে বিচারাধীন বিষয়ে সরকার কোনও সিদ্ধান্ত দিতে পারে না। তাহলে আদালতের অবমাননা হবে। আশা করছি,  শিক্ষার্থীরা সড়কে ভোগান্তি সৃষ্টি না করে সুপ্রিম কোর্টের রায় হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন।’

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি পরিবার উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে আওয়ামী লীগ টানা চারবার রাষ্ট্র ক্ষমতায়। এর প্রথম কারণ জননেত্রী শেখ হাসিনা। দ্বিতীয় কারণ দলের কর্মীরা। কর্মীরাই দলের প্রাণ। শেখ হাসিনার ওপরে যখনই হামলা হয়েছে তখনই কর্মীরাই মানববর্ম সৃষ্টি করে গ্রেনেড-গুলি থেকে রক্ষা করেছেন। দলের দুঃসময়ে অনেক নেতাই দল ছেড়ে চলে গেছেন, বেসুরে কথা বলেছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধাচারণ করেছেন। দলের সঙ্গে, শেখ হাসিনার সঙ্গে বেইমানি করেছেন। কিন্তু কর্মীরা কখনও বেইমানি করেনি। কাজেই সুবিধাবাদীদের চিহ্নিত করে তাদের হাত থেকে দলকে মুক্ত করতে হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বগুড়া-৫ আসনের সংসদ সদস্য মজিবর রহমান মজনুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বগুড়া-৬ সদর আসনের সংসদ সদস্য রাগেবুল আহসান রিপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য সাহাদারা মান্নান, বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, বগুড়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য খাঁন মোহাম্মাদ সাইফুল্লাহ আল মেহেদী, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাড. আব্দুল মতিন, অ্যাড. মকবুল হোসেন মুকুল, আসাদুর রহমান দুলু, অধ্যক্ষ শাহাদৎ আলম ঝুনু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শুভাশীষ পোদ্দার লিটন, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফি নেওয়াজ খান রবিন, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাফুজুল ইসলাম রাজ প্রমুখ।