সাজুগুজু করে নতুন পোশাক পরে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন: মাহিয়া মাহি

‘এই স্বাধীন বাংলাদেশে জমিদারি প্রথার কোনও ভাত নাই। এই দেশের মানুষ স্বাধীন থাকতে চায়। নিজের খেয়ে, নিজের পরে, নিজের মতো করে বাঁচতে চায়। কাউকে ভয় পেয়ে বাঁচতে চায় না। কথা সত্য কিনা? আমি নির্বাচন করছি ট্রাক মার্কায়। ৭ জানুয়ারি সবাই সাজুগুজু করে নতুন পোশাক পরে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটটা দেবেন। গোপনে আপনার মন যাকে পছন্দ করে তাকে ভোট দেবেন। এবারও যদি আপনারা ভুল করেন তাহলে আগামী পাঁচ বছর আবারও কপাল চাপড়াতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় তানোরের পাঁচন্দর ইউনিয়নের কইলবাজারে নির্বাচনি সভায় এসব কথা বলেন রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মহিয়া মাহি। এর আগে বিকালে তিনি একই ইউনিয়নের ইনদহী বাজার, বনকেশর বাজার ও বানিয়াল স্কুল মাঠে নির্বাচনি সভা করেছেন। এ সময় মাহি ভোটারদের কাছ থেকে ট্রাক প্রতীকে ভোট চান।

তিনি বলেন, ‘তানোর-গোদাগাড়ীর খেটে খাওয়া মানুষ, কৃষক, শিক্ষক তাকে (ওমর ফারুক চৌধুরী) ভালোবাসে না। তিনি শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করান। শিক্ষককে মারেন। তিনি এত বড় জমিদার সাহেব হয়ে গেছেন। আমাদের শক্তি বেশি না জমিদারের শক্তি বেশি। জনগণের শক্তি বেশি। আমরা সবাই যদি একজোট হই তাহলে তার অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারবো।’

মাহি বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে এসেছি একটা আবদার নিয়ে। গত ১৫ বছর তো আপনারা একজনকে (বর্তমান সাংসদ) দেখেছেন। ১৫ বছর তো তিনি আপনাদের অনেক উপকার করেছেন। ১৫ বছর আপনাদের সঙ্গে অনেক ভালো ব্যবহার করেছেন। তাই না? প্রতিদিন এখানে (কইলবাজার) এসে বসে বসে চা খেয়েছেন, তাই না? মাসে মাসে আপনাদের কাছে এসেছেন?’ মাহির এমন কথায় উপস্থিত ভোটাররা বলেন, ‘না না আসেননি।’ তখন তিনি বলেন, ‘একবারও আসেন নাই। ১৫ বছরে কি ১৫ দিনও আসেন নাই, আস্তাগফিরুল্লাহ।’

এ চিত্রনায়িকা আরও বলেন, ‘শোনেন আমি আপনাদের বলি, আমি আজকে আমার কাজকর্ম ছেড়ে নির্বাচনের মাঠে নির্বাচন করতে এসেছি। কেন জানেন, আমার একটাই উদ্দেশ্য। সেটা এই তানোর-গোদাগাড়ীর মানুষের কোনও বাকস্বাধীনতা নেই। তারা কোনও কথা বলতে পারেন না। তারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারেন না। কেন পারেন না, ভয়ে পারেন না। কেন একটি মানুষকে সবাই এত ভয় পায়, আজব! একটা সিংহ ছেড়ে দিলেও তো মানুষ এত ভয় পাবে না। কিন্তু আপনারা ওই চৌধুরীকে এত ভয় পান।

মাহিয়া মাহি বলেন, ‘সিনেমায় দেখেছি, চৌধুরীকে নিয়ে ডায়লগ দেয়। চৌধুরী সাহেব, মেহনতি মানুষ আপনার থেকে অনেক শক্তিশালী। কারণ, মেহনতি মানুষের সঙ্গে সাধারণ জনগণ থাকে। চৌধুরী সাহেবের হয়তো অনেক টাকা আছে। কিন্তু তার মন নাই, দিল নাই। তিনি মানুষকে ভালোবাসতে পারেন না। তিনি আপনাদের সঙ্গে বসে চায়ের দোকানে চা খেতে পারেন না। কারণ, তার তো অনেক টাকা। তিনি এসি রুমে বসে থাকবেন। আর খালি মানুষকে শাসন করবেন, আর ওখান থেকে ভয় দেখাবেন। আমি এখানে এসেছি কারণ, এই জমিদারি প্রথার অবসান চাই।’

তিনি বলেন, ‘৭ জানুয়ারি আমরা এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করবো। এই যে ভাইয়েরা, আপনারা গোপনে কাকে ভোট দিচ্ছেন কেউ জানতে পারবে না। তাহলে কাউকে ভয় করার কোনও কারণ নেই। সাত তারিখে সবাই সাজুগুজু করে নতুন পোশাক পরে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোটটা দেবেন। গোপনে আপনার মন যাকে পছন্দ করে তাকে ভোট দেবেন। এবারও যদি আপনারা ভুল করেন তাহলে আগামী পাঁচ বছর আবারও কপাল চাপড়াতে হবে।’

প্রসঙ্গত, এই আসনে একটানা তিনবারের সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি এবারও আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি রাজশাহী-১ (গোদাগাড়ী-তানোর) আসন থেকে নৌকা প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন।