বাউল দিবস পালনে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে ময়মনসিংহ জেলা বাউল সমিতি। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকালে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন সমিতির নেতৃবৃন্দ।
এর আগে, নগরীর বুড়াপীরের মাজার থেকে বাউলশিল্পীরা আধ্যাত্মিক গানে গানে মানবতার জন্য পদযাত্রা করেন। পদযাত্রা শেষে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাউলশিল্পীরা এশিয়ান সংগীত জাদুঘরে বাউলগান পরিবেশন করেন।
বাউলশিল্পীরা জানান, ময়মনসিংহ জেলার প্রায় ৫০০ বাউলশিল্পী-যন্ত্রশিল্পী নিয়ে বাউল সমিতি গঠন করা হয়েছে। বাউলশিল্পীদের জীবন-জীবিকা নির্বাহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই হতদরিদ্র, প্রতিবন্ধী, অসচ্ছল বাউলশিল্পীদের জন্য বাউলসংগীত পরিবেশন করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
আরও জানানো হয়, জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা (ইউনেস্কো) বাউলগানকে ‘মানবতার মৌখিক ও বিমূর্ত ঐতিহ্যের ধারক’ হিসেবে ঘোষণা করে। ইউনেস্কো বাংলাদেশের বাউলগানকে ‘অসাধারণ সৃষ্টি’ বলে একে বিশ্ব সভ্যতার সম্পদ বলে ঘোষণা দিয়েছে। বাউলগানের গুরুত্বকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং এই গানকে বিশ্বের অন্যতম মূল্যবান সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাই ময়মনসিংহ বাউল সমিতি এই দিনটিকে (২৭ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বাউল দিবস’ ঘোষণা ও পালনের দাবি জানায়।
এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলা বাউল সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাউলশিল্পী রেজাউল করিম আসলাম বলেন, ‘বাউলগান শুধু গান নয়, এটি একটি আধ্যাত্মিক পথ। এটি মানবতার, প্রেমের সহনশীলতার সত্যের প্রতীক। বাউলগান মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির মাধ্যমে সম্পর্ক গড়ে তোলে সমাজকে একত্রিত করে। বাউলগান বাঙালি জাতির সংস্কৃতির মূল সত্য।
স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা বাউল সমিতির সভাপতি বাউল সুনীল কর্মকার, সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম, বাউল গফুর, সেতারা বেগম, সুনীল কর্মকার, রফিক, মালেকা প্রমুখ।