ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ৭২ লিটার তেল, ১৮০ কেজি চাল ও ৭০ কেজি ডালসহ নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার এক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বাড়লা গ্রামের নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার ঘর থেকে টিসিবির এসব পণ্যও উদ্ধার করা হয়।
আটক বিএনপি নেতা হলেন আবুল হাসেম ভূঁইয়া। তিনি উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবং ইউনিয়নের বাড়লা গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বর ভূঁইয়ার ছেলে।
দুপুরে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি বলেন, ‘আটক বিএনপি নেতা আবুল হাসেম ভূঁইয়াকে আমাদের থানা হেফাজতে রেখে গেছে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে তার ঘর থেকে উদ্ধার করা টিসিবির চাল, ডাল ও তেল জব্দ করা হয়েছে এবং এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার (২ অক্টোবর) উপজেলার পাইকুড়া ইউনিয়নের মিয়া হোসেন মার্কেট এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রি করতে আসেন মেসার্স আয়েশ ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি। পরে স্থানীয় বিএনপি নেতারা ডিলারের প্রতিনিধির কাছ থেকে টিসিবির মালামাল কেড়ে নিয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে অভিযান চালিয়ে বিএনপি নেতা আবুল হাসেম ভূঁইয়াকে আটকসহ তার বাড়ি থেকে টিসিবির মালামাল উদ্ধার করে সেনাবাহিনী।
এ বিষয়ে টিসিবির ডিলার মেসার্স আয়েশ ট্রেডার্সের মালিকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। তার ব্যবহৃত ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমদাদুল হক তালুকদার ওই ডিলারের প্রতিনিধির বরাত দিয়ে বলেন, ‘মেসার্স আয়েশ ট্রেডার্সের মালিককে যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। তার এক প্রতিনিধির সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি গত বুধবার ওই এলাকায় টিসিবির পণ্য বিতরণ করেন। স্থানীয় বিএনপি নেতারা তার কাছ থেকে মালামাল কেড়ে নিয়ে যায়। বিষয়টি তিনি আমাদেরও অবহিত করেননি। এ ঘটনায় সেনাবাহিনীকে নিয়ে আমরা বসে সিদ্ধান্ত নেবো।’
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘টিসিবির পণ্যসহ পাইকুড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সেনাবাহিনীর কাছে আটক হওয়ার ঘটনাটি শুনেছি। এখনও বিস্তারিত খোঁজ নিতে পারিনি। তবে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ যেকোনও ধরনের অন্যায় না করতে বিএনপির হাইকমান্ড থেকে কড়া নির্দেশনা রয়েছে। আমরা দলীয় নেতাকর্মীদের কাছে বারবার কেন্দ্রীয় নির্দেশনাগুলো পৌঁছে দিচ্ছি। এরপরও যদি কাউকে এসব কাজে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’