নির্বাচনি প্রচারণায় গিয়ে ‍ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র নিহত

ময়মনসিংহের নান্দাইলে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের লিফলেট বিতরণ নিয়ে দ্বন্দ্বে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে মোরাদ হাসান ভূঁইয়া (১৮) নামে এক কলেজছাত্র নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৩১ মে) রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌর শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের নতুন বাজার চন্ডিপাশা স্কুলের পাশে এই ঘটনা ঘটে।

নিহত মোরাদ হাসান ভূঁইয়া নান্দাইল পৌর শহরের কাকচর এলাকার তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি চলতি বছর এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তার বাবা তোফাজ্জল হোসেন ভূঁইয়া পৌরসভার রোলার চালক।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোরাদ হাসান ভূঁইয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা কামরুল হাসান বলেন, ‘মোরাদ তার সঙ্গে আরও কয়েকজনকে নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক ভূঁইয়ার নির্বাচনি পোস্টার ও লিফলেট বিতরণ করতে পৌর শহরের নতুন বাজার এলাকায় যায়। এ সময় নান্দাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম শাহানের সমর্থক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম সালাম মোরাদ ও তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে লিফলেট বিতরণে বাধা দেয়। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে সালাম মোরাদ হাসান ভূঁইয়ার বুকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করলে সে গুরুতর আহত হয়। এ সময় তার সঙ্গে থাকা অন্যরা দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোরাদকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে তাকে ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’

এ বিষয়ে জানতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম সালামের নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী এমদাদুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমার লোকজন নির্বাচনি প্রচারে বের হয়। তারা লিফলেট ও পোস্টার লাগাচ্ছিলেন। এ সময় দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম সালাম তাদের বাধা দেয়। এদিন পরিকল্পিতভাবে সালাম ও তার লোকজন আমার কর্মীদোর মারধর করে। মারধরের একপর্যায়ে মোরাদের বুকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তার মৃত্যু হয়।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দোয়াত কলম প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আমিনুল ইসলাম শাহান বলেন, ‘আমি নির্বাচনি প্রচারণায় ব্যস্ত। কে খুন হয়েছে বা কারা খুন করেছে বিষয়টি আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ. মজিদ বলেন, ‘এ ঘটনায় এখনও কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা জানতে তদন্ত চলছে।’

উল্লেখ্য, চতুর্থ ধাপে আগামী ৫ জুন নান্দাইল উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপজেলায় ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।