মাগুরার আলোচিত শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের জন্য আগামী বুধবার শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত। রবিবার সকালে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসান এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুল।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিল মামলার প্রধান আসামি হিটু শেখসহ অন্য তিন আসামি। তারা হলো- শিশুটির বোনের স্বামী সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ এবং বোনের শাশুড়ি জাহেদা বেগম। এর আগে গত বৃহস্পতিবার মামলাটি চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।
পিপি মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘আগামী বুধবার মামলার চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত। এরপর দ্রুত সময়ে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণের মাধ্যমে বিচারকাজ শুরু হবে।’
গত ১৩ এপ্রিল রাতে মামলার চার আসামির বিরুদ্ধে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আলাউদ্দিন। অভিযোগপত্রে শিশুটির বোনের শ্বশুরকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায় ধর্ষণের ফলে মৃত্যুর অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়। শিশুটির বোনের স্বামী ও ভাশুরকে ভয়ভীতি প্রদর্শন (দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারা) এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে অপরাধের আলামত নষ্টের (দণ্ডবিধির ২০১ ধারা) অভিযোগ করা হয়।
গত ৭ এপ্রিল ডিএনএ প্রতিবেদনে শিশু ধর্ষণের মামলায় মূল অভিযুক্তের (বোনের শ্বশুর) সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ মিলেছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান পুলিশের খুলনা রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. রেজাউল হক। তার আগে একাই শিশুটিকে ধর্ষণ করেছে বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিল শিশুটির বোনের শ্বশুর। জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছিল, ৬ মার্চ সকালে তার ছোট ছেলের (বোনের স্বামী) কক্ষে শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা চালায়।
গত ১ মার্চ নিজ বাড়ি থেকে বড় বোনের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায় শিশুটি। ৬ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১৩ মার্চ দুপুরে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। ওই দিন সন্ধ্যায় শিশুটির লাশ হেলিকপ্টারে মাগুরায় নেওয়া হয়। প্রথম জানাজা শেষে উত্তেজিত জনতা শিশুটির বোনের শ্বশুরবাড়িতে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।
গত ৮ মার্চ মাগুরা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন শিশুটির মা। মামলায় শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে আসামি করা হয়। বর্তমানে কারাগারে আসামিরা।