মেহেরপুর জেলায় বিভিন্ন সময় হারানো, চুরি ও ছিনতাই হওয়া ১০৭টি মোবাইল উদ্ধার করে ভুক্তভোগীদের হাতে তুলে দিলেন পুলিশ। এ সময় বিকাশ ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণাপূর্বক হাতিয়ে নেওয়া ছয় লাখ সাত হাজার টাকা প্রতারিত ব্যক্তিদের কাছে ফিরেয়ে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে মোবাইলগুলো প্রকৃত মালিকের কাছে হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম।
জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর থানা এলাকায় হারিয়ে যাওয়া মোবাইল সংক্রান্ত ভুক্তভোগীদের জিডির বিপরীতে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে বিভিন্ন জেলায় অভিযান পরিচালনা করে ৭০১টি মোবাইল উদ্ধার করে।
উদ্ধার হওয়া মোবাইল সদর থানার ৬১টি, গাংনী থানার ১৬টি ও মুজিবনগর থানার ৩০টি সহ সর্বমোট ১০৭টি অ্যান্ড্রয়েড ও বাটন মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
এ সময় ভুক্তভোগীরা তাদের হারানো মোবাইল ফোন পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন ও পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। অনেকে মোবাইল ফিরে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন।
প্রতারিত টাকা ফিরে পেয়ে মোবাইল ব্যাংকিং দোকানদার হাফিজুল ইসলাম বলেন, টাকাগুলো প্রতারকের হাতে চলে যাওয়ার পর আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। পরে আমি থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ আমার টাকা উদ্ধার করে ফেরত দিল। এমন এমন প্রশংসনীয় কাজের জন্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানাই।
পুলিশ সুপার মাকসুদা আকতার খানম বলেন, মেহেরপুর জেলায় মোবাইল হারানো জিডি হলে ভুক্তভোগীদের তদবির বা যোগাযোগ ব্যতিরেকে স্বতঃপ্রণোদিতভাবে সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের সদস্যরা এ উদ্ধার কাজ করে থাকেন। হারানো, চুরি বা ছিনতাই হওয়া মোবাইল ফিরে পাওয়া যায় না- এমন ধারণা থেকে বের হয়ে এসে পুলিশের সহযোগিতা নেওয়ার আহ্বান করেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের সব সদস্য নিষ্ঠা, সততা, দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে উদ্ধার করা মোবাইল ফোনগুলো প্রকৃত মালিকের হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই আজকের এই আয়োজন।
প্রেস ব্রিফিং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সার্কেল আব্দুল করিম, জেলা গোয়েন্দা সংস্থা (ডিবি) ওসি গৌতম কুমার কর্মকারসহ পুলিশের বিভিন্ন শাখার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল থেকে জানানো হয়, অভিযোগের মধ্যে ছিল বিদেশে পাঠানোর লোভ দেখিয়ে ভিসা জালিয়াতি চক্র, বিকাশ প্রতারক চক্র, অনলাইনে কেনাকাটা সংক্রান্ত প্রতারক চক্রসহ অনলাইন বিভিন্ন ধরনের প্রতারণার মাধ্যমে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভুক্তভোগীরা আইনি সহায়তার জন্য থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করে। পরে জেলা সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেলের সদস্যরা প্রতারকদের তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেফতার করে। ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে সাইবার স্পেসে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করা এবং বিভিন্ন সময়ে বিকাশ ও নগদ মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ভুলক্রমে এক নম্বর থেকে অন্য নম্বরে চলে যাওয়া ছয় লাখ টাকা উদ্ধারসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতারক চক্রের তিন জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া থানায় জিডিমূলে হারানো মোবাইল উদ্ধারের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন সেল, মেহেরপুর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।