৭ মাস পর খুলে দেওয়া হলো মিরপুর উপজেলা পরিষদের সেই গেট

অবশেষে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা পরিষদের ২ নম্বর গেটটি খোলা হয়েছে। বুধবার (৯ এপ্রিল) সকালে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নাজমুল ইসলাম বাপ্পি নিজেই তালা খুলে সবার জন্য গেট উন্মুক্ত করে দেন। উপজেলা পরিষদের গেটটি দীর্ঘ প্রায় ৭ মাস ধরে বন্ধ রাখা হয়েছিল।

স্থানীয় চা-দোকানি আজিজুল হক বলেন, ‘বুধবার সকাল ৯টার দিকে ইউএনও স্যার এসে নিজেই গেটের তালা খুলে দেন। এরপর আমাদের বলেন, সকাল ৯টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এটি খোলা রাখ হবে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গেটটি খুলে দেওয়ায় আমরা সবাই খুশি হয়েছি।’

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর মিরপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব রহমত আলী রব্বানসহ উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। এর পরদিন ২৫ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিবি করিমুন্নেছার নির্দেশে উপজেলা পরিষদের তিনটি গেটের মধ্যে দুটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বন্ধ গেট দুটির অন্তত একটি খুলে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও ইউএনও এতে কোনও কর্ণপাত করেননি।

গেট দুটি বন্ধ নিয়ে চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনে উপজেলার গেট বন্ধ থাকায় বিপাকে ব্যবসায়ীরা, সিদ্ধান্তে অনড় ইউএনও শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।

এর ৩ দিন পর ১৯ ফেব্রুয়ারি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিবি করিমুন্নেছাকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে বদলি করা হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় মাঠ প্রশাসন-২ শাখা উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। এরপর তিনি বদলি ঠেকাতে নানা তৎপরতা শুরু করেন।

এর প্রতিবাদে ২৭ ফেব্রুয়ারি উপজেলা পরিষদের সামনের ফটকে মিরপুরের সর্বস্তরের জনতার ব্যানারে ইউএনও বিবি করিমুন্নেছার দায়িত্ব দ্রুত হস্তান্তরের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ুমিছিল করেন স্থানীয়রা। উপজেলা প্রশাসনের কাজে উদাসীনতা ও আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের প্রচেষ্টাকারী হিসেবে অভিহিত করে ইউএনওর বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভ করেন তারা।

একই দিন ২৭ ফেব্রুয়ারি বিকালে তৎকালীন ইউএনও বিবি করিমুন্নেছা বদলি ঠেকাতে মিরপুরের সর্বস্তরের জনগণের ব্যানারে মিরপুর পৌরসভা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং এবং সরকারি অফিসের নৈশপ্রহরীদের দিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বলে অভিযোগ ওঠে।

প্রসঙ্গত, উপজেলা পরিষদের এলাকায় প্রায় ৫৭টি দোকান রয়েছে। এর মধ্যে শুধু ২ নম্বর গেটে  প্রায় ৩৮টি দোকান রয়েছে। এ ছাড়ারও এই গেটে সংলগ্ন লাগোয়া একটি মসজিদ রয়েছে। যেটা দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নামাজ আদায় করতে আসতেন। গেটটি বন্ধ থাকায় এসব মুসল্লিদের বিকল্প গেট দিয়ে নামাজ আদায় করতে আসতে হতো।