সেহরি খেতে উঠে দেখেন বিধবার ৬ গরু চুরি হয়ে গেছে

যশোরের মণিরামপুরে গোয়ালঘরের তালা ভেঙে সেলিনা খাতুন (৫০) নামে এক বিধবার ছয়টি গরু চুরির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (৪ মার্চ) মধ্যরাতে উপজেলার মাঝিয়ালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। সেলিনা খাতুন ওই গ্রামের আনসার আলীর স্ত্রী।

৫-৬ বছর আগে কীটনাশক ছিটাতে গিয়ে বেগুনক্ষেতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তার স্বামী আনসার আলীর মৃত্যু হয়। চুরি হওয়া ছোট বড় ছয়টি গরুর আনুমানিক মূল্য চার লাখ টাকা বলে জানিয়েছেন তিনি।

এদিকে, নিজের কষ্টের সম্বল হারিয়ে নির্বাক হয়ে পড়েছেন সেলিনা খাতুন। খবর পেয়ে বুধবার (৫ মার্চ) সকালে সহকারী পুলিশ সুপার (মণিরামপুর সার্কেল) এমদাদুল হক, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত সেলিনা খাতুন বলেন, ‘৮টা গরু পুষেছি খুব কষ্টে। মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে গোয়ালে তালা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি। এরপর রাত ৪টার দিকে সেহরি খেতে উঠে দেখি গোয়ালঘরের দরজা খোলা। দৌড়ে গিয়ে দেখি আমার ঘর ফাঁকা। দরজার তালা ভেঙে গোয়ালের ৮টা গরুর মধ্যে ৬টা নিয়ে গেছে।’

বিধবা সেলিনার দেবর মিকাইল হোসেন বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে দেখেছি গোয়ালে সব ঠিকঠাক আছে। এরপর ভাবির কান্নার চিৎকার শুনে উঠে দেখি গোয়ালে ৬টা গরু নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘দৌড়ে বাড়ির একটু দূরে যেয়ে রাস্তায় গরুর ছেঁড়া দড়ি ও একটা গ্যাসলাইট পাইছি। সেখানে গাড়ির চাকার দাগ দেখেছি। সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের মাইকে গরু চুরির ঘোষণা দিয়ে আমরা চারদিকে খুঁজতে বেরিয়েছি। কোনও খোঁজ পাইনি।’

সেলিনা বেগমের আরেক দেবর জাকির হোসেন বলেন, ‘ভাই কোনও জমিজমা রেখে যেতে পারেননি। ভাবি তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলেকে অনেক কষ্টে বিদেশে পাঠিয়েছেন। একটা ছেলে ছোট। মেজো ছেলে মুরাদ মাঠে জমি বর্গা নিয়ে চাষের কাজ করে। বাড়িতে ভাবি গরু পালন করে সংসার টিকিয়ে রেখেছেন। এখন চোর তাকে নিঃস্ব করে গেছে। বুধবার সকালে থানায় গিয়ে গরু চুরির বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েছি।’

মণিরামপুর থানার ওসি নূর মোহাম্মদ গাজী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। চোরচক্র চিহ্নিত করতে কাজ করছি।’

ওসি বলেন, ‘খেদাপাড়া ক্যাম্প পুলিশ রাতে এলাকায় টহল দেয়। এ ছাড়া থানার দুটি গাড়িতে রাতে পুলিশের টহল অব্যাহত আছে।’