যশোরের অভয়নগরের শুভরাড়া এলাকায় ভৈরব নদে ইউরিয়া সারবোঝাই একটি কার্গো জাহাজ ডুবে গেছে। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সকালে এম ভি সেভেন সীজ-৪ কার্গো জাহাজটির তলা ফেটে পানি ঢুকে নদের পানিতে ডুবে যায়। জাহাজে প্রায় ৮৫০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার ছিল।
এর মধ্যে শনিবার ৪৫ মেট্রিক টন এবং আজ (রবিবার) ভেজা অবস্থায় ৪০০ মেট্রিক টন সার নামানো হয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের।
ওই সার বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) বিদেশ থেকে আমদানি করেছে। ঢাকার পরিবহন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিট অ্যাসোসিয়েটস ওই সারের পরিবহন ঠিকাদার।
বিসিআইসি সূত্র জানায়, বিদেশ থেকে বড় জাহাজে করে আমদানি করা ইউরিয়া সার চট্টগ্রাম বন্দরে এবং মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ায় আনা হয়। সেখানে বড় জাহাজ থেকে ইউরিয়া সার ছোট জাহাজে (কার্গো জাহাজ) করে অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় আনা হয়। নওয়াপাড়ায় কার্গো জাহাজ থেকে নামিয়ে ওই ইউরিয়া সার ট্রাকে করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কয়েকটি জেলার বাফার গুদামে নেওয়া হয়।
এম ভি সেভেন সীজ-৪-এর মাস্টার জুয়েল হোসেন জানিয়েছেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি রাতে ইউরিয়া সার বোঝাই করে রওনা দিয়ে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে অভয়নগর উপজেলা শুভরাড়া খেয়াঘাট এলাকায় পৌঁছান। এরপর থেকে থেকে কার্গো জাহাজটি শুভরাড়া খেয়াঘাটের পাশে ভৈরব নদে নোঙর করা ছিল। শনিবার জাহাজ থেকে ৯০০ বস্তা (৪৫ টন) সার নামানো হয়। শনিবার রাত ৮টার দিকে নদে ভাটা ছিল। এ সময় নদে পানি একেবারেই কমে যায়। জাহাজের তলদেশ নদের মাটির সঙ্গে ঠেকে ছিল। মাটিতে পাথর কিংবা শক্ত কোনও বস্তু ছিল। জাহাজের তলদেশের সঙ্গে ওই শক্ত বস্তুর আঘাত লাগে। এতে কার্গোর তলদেশ ফেটে যায়। এদিন রাত ১২টার দিকে নদে জোয়ার আসতে শুরু করে। এতে জোয়ারের সময় জাহাজে পানি উঠতে থাকে এবং জাহাজটি ধীরে ধীরে নদের পানিতে তলিয়ে যেতে থাকে। আজ সকালে জাহাজটি নদের পানিতে ডুবে যায়।
তিনি বলেন, ‘কার্গো জাহাজে পানি ঢুকে অনেক সার ভিজে গেছে। আজ জাহাজ থেকে প্রায় ৪০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার নামানো হয়েছে।’
পরিবহন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামিট অ্যাসোসিয়েটসের ব্যবস্থাপক ওবায়দুল হক বলেন, ‘অভয়নগরের ভৈরব নদে ইউরিয়া সারবোঝাই জাহাজ ডুবে যাওয়ার কোনও খবর আমরা পাইনি।’
এর আগে, গত ২৫ জানুয়ারি অভয়নগর উপজেলার সিদ্দিপাশা এলাকায় ভৈরব নদে গমবোঝাই এম ভি ওয়েস্টার্ন-২ কার্গো জাহাজটি কাত হয়ে পানি ঢুকে নদের পানিতে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার সময় জাহাজে প্রায় ৭০০ মেট্রিক টন গম ছিল।