পাঁচ কোটি টাকার টেন্ডার না পাওয়ায় যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদের শার্টের কলার ধরলেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শরফুদ্দৌলা ছোটলু। একইসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন শরফুদ্দৌলা ও তার অনুসারীরা।
বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) সকালে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। শরফুদ্দৌলা ছোটলু বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগাঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের মামা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ২১ এবং ২৮ অক্টোবর যশোর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসা সরঞ্জামাদি (এমএসআর) ক্রয়-বিষয়ক পাঁচ কোটি টাকার টেন্ডার ডাকা হয়। টেন্ডারে কয়েকটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। এতে শরফুদ্দৌলা ছোটলুও অংশ নেন। কিন্তু সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে টেন্ডার পায় প্যারাগন হারমাইন ও জাজ করপোরেশন নামে দুটি প্রতিষ্ঠান। পরে তা ঢাকায় অনুমোদনের জন্য পাঠায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
টেন্ডার না পাওয়ার বিষয়টি জানতে পেরে শরফুদ্দৌলা ছোটলু বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাত-আট জন নেতাকর্মী নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদের কক্ষে যান। সেখানে গিয়েই তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। একপর্যায়ে শার্টের কলার ধরে তত্ত্বাবধায়ককে চেয়ার থেকে উঠিয়ে বাইরে আনার চেষ্টা করেন শরফুদ্দৌলা। এ সময় হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। শেষে শরফুদ্দৌলা ও তার লোকজন তত্ত্বাবধায়ককে হুমকি দিয়ে সেখান থেকে চলে যান।
এ ব্যাপারে জানতে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদকে একাধিকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। তবে ঘটনার পরপরই স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিককে তিনি বলেছেন, ‘বর্তমানে টেন্ডার অনলাইনে অনুষ্ঠিত হয়। এখানে কারচুপির কোনও সুযোগ নেই। তারপরও টেন্ডার না পেয়ে কারচুপির অভিযোগ এনে ছোটলু সাহেব ও তার লোকজন আমাকে লাঞ্ছিত করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি আমি।’
তত্ত্বাবধায়ককে লাঞ্ছিতের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেতা শরফুদ্দৌলা ছোটলু বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘টেন্ডার নিয়ে আমার সঙ্গে তার কোনও ঝামেলা হয়নি। তবে আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। হাবিবুল্লাহ নামে যুবদলের এক কর্মীর সঙ্গে তত্ত্বাবধায়কের ঝামেলা হয়েছিল। আমি তাদের ঝামেলা মীমাংসা করে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে যশোরের জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমনটি হয়েছে। পরে বিষয়টি মীমাংসা করে নিয়েছেন।’